ঢাকা: সরকার টু সরকার চুক্তির আওতায় বিশ্বের ৭টি দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে আগামী ৬ মাসের জন্য ১৮ লাখ মেট্রিকটন পরিশোধিত তেল কিনবে সরকার। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৪৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪ সময়ের প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইস অনুযায়ী এই ক্রয়প্রস্তাব দেওয়া হয়। তেল কেনার আগে একটু নেগোশিয়েট করে রাখতে হয়। আমরা কোন কোন দেশ হতে কী পরিমাণ জ্বালানি তেল কিনব এসব বিষয়ে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের এই ক্রয় প্রস্তাবের মোট ১৮ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত তেল ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৪৮৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-ওকিউটি ওমান, পিআইএলসিএল মালয়েশিয়া, পিআইটিটি থাইল্যান্ড, এনকো আরব আমিরাত, পেট্রো চায়না চীন, বিএসপি ইন্দোনেশিয়া, ইউনিপেক চীন এবং আইওসিএল মালয়েশিয়া।
তিনি জানান, ২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ওমান, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, আরব আমিরাত, চীন ও ইন্দোনেশিয়া থেকে সম্ভাব্য কি পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে, তার প্রিমিয়াম এবং প্রাইসসহ একটা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সচিব জানান, চলতি বছরের ২৮ জুনে বিভিন্ন তেলের যে দাম ছিল সেটাকে রেফারেন্স প্রাইস হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। প্রিমিয়াম বিভিন্ন জ্বালানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম। যেমন প্রতি ব্যারেল ডিজেলের প্রিমিয়াম ৮.৮০ মার্কিন ডলার, জেট ফুয়েল ১০.৮৮ ডলার, ফার্নেস অয়েল ৪৬.৭২ ডলার, অকটেন ৯.৮৮ ডলার এবং মেরিন ফুয়েল ৭৬.৮৮ ডলার। এটা টেন্ডারে পাওয়া প্রিমিয়াম।
তবে জি-টু-জি ভিত্তিতে কিছুটা কমে পাওয়া গেছে বলে জানান সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান। তিনি বলেন, জি-টু-জি ভিত্তিতে প্রতি ব্যারেল ডিজেলের প্রিমিয়াম ৮.৭৫ মার্কিন ডলার, জেট ফুয়েল ১০.৮৮ ডলার, ফার্নেস অয়েল ৪৬.৭০ ডলার।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম কর্পোরেশন (বিপিসি)’র ২০২৪ সালের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর তারিখের সিসিইএ’র সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়। দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে মেয়াদি চুক্তির আওতায় জি-টু-জি ভিত্তিতে নেগোসিয়েশন করা বিভিন্ন দেশের ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান (বিএসপি ইন্দোনেশিয়া, ইএনওসি আরব আমিরাত, আইওসিএল মালয়েশিয়া, পেট্রোচায়না চীন, পিটিএলসিএল মালয়েশিয়া, পিটিটিটি থাইল্যান্ড, ওকিউটি ওমান ও ইউএনআইপিইসি চীন) থেকে ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর সময়ের জন্য ১৮ লাখ মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে গ্যাস অয়েল ১১ লাখ মেট্রিক টন, জেট ফুয়েল ২০ হাজার মেট্রিক টন, ফার্নেস অয়েল ২ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন, মোগ্যাস ১ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন এবং মেরিন ফুয়েল ৩০ হাজার মেট্রিক টন আমদানি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০২৪
জিসিজি/এসএএইচ