বরিশাল : লাগাতার অবরোধের সঙ্গে হরতালের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে বরিশালের ব্যবসা-বাণিজ্য। অবরোধ-হরতালে গাড়ি ভাঙচুর ও নানা অাতঙ্কে যানবাহনের মালিকরা গাড়ি নামাতে ভয় পাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ জানুয়েরি) বিভিন্ন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভাগীয় শহর বরিশালে বেশ কয়েকটি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ছাড়াও আছে কাঁচামাল, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া দেশের অন্যতম ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠান অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড, ফরচুন সুজ, অ্যাংকর সিমেন্ট, সোনারগাঁও টেক্সটাইলস মিলসহ কয়েকটি উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম, বেনাপোল-যশোরসহ দেশের অন্যান্য স্থান থেকে আমদানি করা হয় এসব প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল। কিন্তু টানা অবরোধে সড়কপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য ও কাঁচামাল সরবরাহ অনেকটাই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সড়কপথে পণ্য আমদানি করলেও দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় পণ্য ও কাঁচামাল আমদানি করলেও তা বিক্রি না হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।
এ অবস্থায় বরিশালের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে অনেকটা মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। এমনকি ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শাক-সবজি, ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ব্যবসাও মন্দার মুখে পড়েছে। সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে শাক-সবজির দাম। এদিকে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করতে না পারায় মাঠেই পচে নষ্ট হচ্ছে সবজি।
এদিকে সুতা উৎপাদনশীল কারখানা সোনারগাঁও টেক্সটাইলস মিলসে গত শনিবার (১০ জানুয়ারি) থেকে তিনদিনের জন্য লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা করে বলেন, এ অবস্থা আরো কিছুদিন চললে বরিশালের ব্যবসা ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপর্যয় ঘটতে পারে। বরিশালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সচল রাখতে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চান তারা।
বরিশাল সিমেন্ট ও লৌহজাত দ্রব্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির উৎপাদনশীল সব প্রতিষ্ঠানকে হরতাল-অবরোধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়ে বাংলানিউজকে বলেন, টানা অবরোধ ও হরতালে পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না। এ কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মন্দাভাব চলছে। শুধু ব্যবসায়ীরাই নয়, শ্রমিকরাও ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। অনেকে অর্থের অভাবে পেশা পাল্টে ফেলছেন।
বরিশাল চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি আমিনুর রহমান খান দেশের অর্থনীতির স্বার্থে হরতালের বিকল্প চিন্তা করার আহ্বান জানান রাজনীতিবিদদের।
হরতালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পরিবহন মালিকরা। এমনটাই জানালেন বরিশাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি আফতাব হোসেন। তিনি জানান, স্বাভাবিক সময়ে যে পরিমাণ যাত্রী পরিবহন হতো, হরতাল-অবরোধে নাশকতার আশঙ্কায় তা কমে গেছে।
যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া ও হামলা-ভাঙচুরের ফলে আতঙ্কে সড়কে গাড়ি নামাতেও ভয় পাচ্ছেন মালিকরা।
বাংলাদেশসময়: ১২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৫