সাভার (ঢাকা): লাগাতার অবরোধের কারণে দেশের অন্যান্য খাতের মতো পোশাক খাতেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। আর এর মাশুল গুণতে হচ্ছে খেটে খাওয়া শ্রমিকদের।
শনিবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের এ দুরাবস্থার কথা জানা যায়।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০দলীয় জোটের ডাকা লাগাতার আবরোধে দেশের অর্থনৈতিক খাতে নেতিবাচক প্রভাবে পড়ছে। রাজনীতির এ নেতিবাচক প্রভাবের কারণে বহির্বিশ্বও এদেশের পোশাক খাত থেকে দিনদিন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে কারখানাগুলোতে কাজও কমে যাচ্ছে। ক্ষতির সম্মুখে পরে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ারও নজির রয়েছে।
পোশাক শ্রমিক আব্দুল আলীম বাংলানিউজকে বলেন- ভাই, আমগোর কারখানায় এহন কাজ খুবই কম। মালিকরা বলছে বিদেশ থেইকা কাজই আসতাছে না। কারখানায় শুধু হাজিরা দিতাছি। ওভারটাইম তো হয়ই না। এহন চাকরি হারানোর ভয়ে আছি।
চায়না মালিকানাধীন এক পোশাক কারখানার সুপারভাইজার উজ্জল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা পোশাক শ্রমিক। দেশের সব পোশাক শ্রমিক কেমন রয়েছে তার খবর কিন্তু আমগো থেইকা কেউ বেশি জানেনা। আসলে ভাই, আমরা পোশাক শ্রমিকরা ভাল নেই।
তিনি বলেন, শহরে ঘর ভাড়া দিন দিন বাড়ছে, তরকারি-নূনের দাম বাড়ছে, কিন্তু পোশাক শ্রমিকদের ভাগ্য আরো গর্তে যাইতেছে। মালিকরাই তো ফতুর হয়ে যাইতেছে। আর আমরা তো দূরের কথা ভাই।
ডিইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার সুইং অপারেটর মরিয়ম আক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের কারখানায়ও পোশাকের উৎপাদন কমে গেছে। এজন্য শ্রমিকদের আগের মত কাজের চাপ নেই বলেও জানান তিনি।
দেশিয় মালিকানাধীন এক পোশাক কারখানার আপারেটর মিজানুর রহমান বলেন, আগে ওভারটাইম করে বেতন উঠাইতাম বার হাজার টেকার উপরে। কিন্তু চলতি মাসে বেতন পামু খুব বেশি হইলে আট হাজার টেকা।
মিজানের পরিবারের মাসিক খরচ যেখানে দশ হাজার টাকা, সেখানে আট হাজার টাকা বেতন পেলে বাকি দু’হাজার টাকা মেলাবে কিভাবে এ চিন্তায় রাতের ঘুম যেন হারাম হয়েছে তার।
দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত হলেই অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশসময়: ১২০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৫