ঢাকা: সরকারের হঠাৎ ঘোষণায় বিষ্মিত বাংলাদেশ ব্যাংক। দুই টাকা ও এক টাকার মুদ্রা বাতিল করা হবে, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের এমন ঘোষণা আসে রোববার দুপুরে।
কিন্তু বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা বিভাগে কথা বলে বাংলানিউজ জানতে পারে, এক ও দুই টাকার মুদ্রা বাতিলের সিদ্ধান্ত তাদের জানা নেই। বরং দুই টাকার নতুন কাগুজে নোট ছাপানোর কাজ চলছে।
বিভাগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বাংলানিউজকে জানায়, মুদ্রা প্রত্যাহার করা হবে এমন কোনও সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
সরকারি এই দুটি নোটের ব্যবহার চলছে এবং চাহিদা বাজারে এখনো রয়েছে বলেই জানায় সূত্রটি। আর প্রয়োজন ও চাহিদার বিবেচনায়ই দুই টাকার নতুন কাগুজে নোট ছাপার কাজ হাতে নিয়েছে সরকার।
নতুন অর্থসচিব মাহবুব আহমেদের স্বাক্ষর সম্বলিত সে নোট শিগগিরই বাজারে আসছে বলেও নিশ্চিত করেছে সূত্রটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, সরকার ৫ টাকার মুদ্রাটি সরকারিকরণের চিন্তা-ভাবনা করছে। এই মুদ্রাটি বর্তমানে ব্যাংক নোট হিসেবে বাজারের রয়েছে।
সূত্রটি জানায়, ৫ টাকার কাগুজে নোট ও ধাতব মুদ্রা যাই হোক তা সরকারি মুদ্রা হিসেবে প্রকাশ করার বিষয়ে যে প্রস্তাব রয়েছে সে বিষয় নিয়েই আলোচনা চলছে। রোববার সকালে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সে বিষয়ে কথা বলেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে যান।
দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি হঠাৎ করেই এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রা বিভাগ এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রস্তুত নয়।
একই কথা বাংলানিউজকে বলেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়েরও একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। ব্যাংকিং ডিভিশনের ওই উচ্চপদস্থ বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তের কথা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগে এ পর্যন্ত জানা যায়নি।
রোববার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান, অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ, এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমানসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভ্যাট আইন সংশোধন নিয়ে বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, সর্বনিম্ন মুদ্রা হবে ৫ টাকা। বাজারে প্রচলিত এক টাকা ও দুই টাকার মূদ্রা ও কাগুজে টাকার প্রচলন থাকবে না। প্রচলিত এই মুদ্রা বাজার থেকে উঠিয়ে নিতে প্রায় তিনশ কোটি টাকা লাগবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই মুদ্রা ও কাগুজে টাকা উঠিয়ে নেওয়ার পর পাঁচ টাকার নতুন নোট চালু করা হবে।
এতে কারা বেশি লাভবান হবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের চেয়ে সাধারণ মানুষই বেশি লাভবান হবেন। ব্যবহার অযোগ্য টাকা নিয়ে মানুষকে আর ঘুরতে হবে না।
বাজারে এক টাকা ও দুই টাকার চকলেট আছে তা কেনার সময় কী হবে এমন প্রশ্নও তোলা হয় সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে। তার উত্তরে বিস্ময় প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন করেন, বাজারে কী এক টাকায় চকলেট পাওয়া যায়?
বিষয়টি নিয়ে জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলানিউজ।
বাংলাদেশ সময় ০০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৫