আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): বিরোধী দলের টানা হরতাল-অবরোধে অচল হয়ে পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসহ সাতটি পাহাড়ি রাজ্যের অন্যতম দ্বার আখাউড়া স্থলবন্দর।
অবরোধের কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর ও শতভাগ রফতানিমুখী স্থলবন্দরটির আমদানি-রফতানি কার্যক্রম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বন্দরের সহস্রাধিক কর্মমুখী মানুষের কপালে এখন চিন্তার ভাজ পড়েছে।
প্রভাব পড়েছে বন্দরের পরিবহন সেক্টরেও। অবরোধের কারণে কমে গেছে দু’দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের আসা-যাওয়া।
আখাউড়া স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক ব্যবসায়ী আকতার হোসেন সাজু বাংলানিউজকে বলেন, আগে যেখানে প্রতিদিন গড়ে দুইশ থেকে আড়াই পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে আসত। কিন্ত হরতাল- অবরোধের কারণে প্রতিদিন ৭০/৮০টি ট্রাক আসছে। তাও আবার দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে।
ব্যবসায়ী আকতার হোসেন সরকারের কাছে দাবি রাখেন, যেহেতু এটি একটি রফতানিমুখী বন্দর। রফতানি ও দেশের রাজস্ব আয়ের কথা চিন্তা করে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো যেন পুলিশি পাহাড়ায় স্থলবন্দরে নিয়ে আসা হয়।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বাবুল বাংলানিউজকে বলেন, বিরোধী দলের টানা হরতালে আখাউড়া স্থলবন্দরে ব্যাপক পড়েছে। পাথর পরিবহন খরচ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ছোট-বড় মাছ রফতানিতেও প্রভাব পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, সময় মতো আমরা মাছ রফতানি করতে পারছি না। বিভিন্ন জায়গায় মাছ রফতানিতে বাধা গ্রস্ত হওয়ায় বন্দরে মাছ আসতে আসতে অনেকটা পচন ধরে যায়। তাতে আমাদের অনেক লোকসান গুণতে হচ্ছে এবং বাজারও হারাচ্ছি।
হরতাল-অবরোধকারীদের কাছে আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, রফতানিমুখী পণ্যবাহী ট্রাকগুলো যেন হরতাল-অবরোধের আওতা মুক্ত রাখা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন বাংলানিউজকে জানান, হরতাল অবরোধ আতঙ্কে সিলেট থেকে কোনো পাথর বোঝাই ট্রাক আসছে না। কোনো রকমে ঝুঁকি নিয়ে পাথর বোঝাই কিছু ট্রাক আশুগঞ্জ থেকে বন্দরে আসছে।
এ অবস্থা চলতে থাকলে এই অঞ্চলের ট্রাক শ্রমিকদের না খেয়ে মরতে হবে।
এ ব্যাপারে আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার (শুল্ক) আহসানউল্লাহ বন্দরে রফতানি আয় কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, টানা অবরোধের কারণে বন্দরে প্রভাব পড়েছে। এতে বন্দরের রফতানি আয় অনেকটা কমে গেছে।
এদিকে বিএনপির টানা অবরোধে বন্দরের চেকপোস্ট দিয়ে দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীদের পারাপারও কমে গেছে।
আখাউড়া চেকপোস্টের ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়া বাংলানিউজকে জানান, আগে গড়ে প্রতিদিন চারশ যাত্রী যাতায়ত করতো। অবরোধের কারণে বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫