মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: বৃহস্পতিবার ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৯তম দিন। গত বছরের এ দিনে মেলায় পা ফেলার ঠাঁই ছিল না।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সংখ্যা ছিল একেবারেই কম।
ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি না থাকায় বোঝার উপায় ছিল না যে, অনেকদিন ধরে চলছে আন্তর্জাতিক ঢাকা বাণিজ্য মেলা। শেষের দিকে যেখানে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের সামলাতে হিমশিম খেতে হয় দোকানিদের, সেখানে এ বছর অনেকটা বসে বসেই দিন পার করছেন তারা।
বিক্রেতা, ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের অভিযোগ, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ ও হরতালের ফাঁদে পরেই মেলার এহেন দুরাবস্থা।
তবে চলতি বছরের শুরুতে হরতাল ও অবরোধে মেলার গতি কিছুটা কম থাকলেও দুপুরের পর থেকে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের আগমনে সুবাতাস বয়ে যায় মেলা প্রাঙ্গণে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের দিনটা ছিল একেবারেই ভিন্ন। মেলা প্রাঙ্গণ প্রায় শূন্য থাকায় ব্যবসায়ীদের অসহায়ত্বই বার বার চোখে পড়ছিল।
এদিকে, বিকেলের পর মেলা প্রাঙ্গণে একটু হিমেল বাতাস বয়ে গেলেও দর্শনার্থীদের পদভারে মেলা প্রাঙ্গণ আর জমে ওঠেনি।
তব ব্যতিক্রম ছিল ছুটির দিনগুলোতে। এ দিনগুলোতে উপচেপড়া ভিড়ে কিছুটা প্রাণ ফিরে পায় দেশের বৃহৎ এ বাণিজ্য মেলা।
এ বিষয়ে স্টলের দোকানিরা জানালেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিক্রি অনেক কম হয়েছে। দুই/একজন দর্শনার্থী আসেন; কিছু সময় পার করে চলে যান। এই ছিল অবস্থা।
বিক্রেতা শাহেদ পারভেজ বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবারই প্রথম যে, এত কম বিক্রি হলো। সকাল থেকেই মেলা প্রাঙ্গণ ছিল ফাঁকা। মনেই হয়নি যে, এটি আন্তর্জাতিক মানের একটি মেলা। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
টপটেন স্টলের উপদেষ্টা ইমরান হোসেন তালুকদার বলেন, কোটি টাকার ওপরে খরচ করে মেলায় স্টল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ক্রেতাদের অভাবে সব ভেস্তে যেতে বসেছে। সারাদিন যা বিক্রি হয়েছে, তাতে সবার মজুরির-মাইনে হবে না।
দর্শনার্থীরাও খুশি নন মেলার এ রকম ফাঁকা চিত্র দেখে। বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নের পাশ দিয়ে কয়েক বন্ধু মেলার উপস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলেন।
তাদের মধ্য থেকে শফিকুল ইসলাম বলেন, মেলায় অনেক মানুষের উপস্থিতি থাকবে এটাই স্বাভাবিক। উৎসবের আমেজ থাকবে। কিন্তু কেমন যেন সব ফাঁকা ফাঁকা লাগছে!
অবরোধ ও হরতালের কারণে ১০ দিন মেলার সময় বাড়ানোর পরও দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপস্থিতি না বাড়ায় লোকসানে পড়তে হবে এমনটাই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৫