ঢাকা: হাজারীবাগ থেকে চামড়া শিল্পনগরী (ট্যানারি) স্থানান্তরের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু করেছে সরকার। প্রাথমিকভাবে চারটি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিপূরণের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) শিল্প মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু চারটি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিপূরণের চেক দেন।
মেসার্স মামুন ট্রেডার্সকে দুই লাখ ৩৯ হাজার আটশ ৮৪ টাকা, মেসার্স মক্কা মদিনা লেদার কমপ্লেক্সকে ১২ লাখ ১৩ হাজার পাঁচশ ৪৩ টাকা, মেসার্স রাজিব লেদার কমপ্লেক্সকে ২২ লাখ ৮২ হাজার আটশ ৫৮ টাকা এবং মেসার্স ফেন্সি লেদার কমপ্লেক্সকে ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ছয়শ ১৪ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে।
এ সময় শিল্পমন্ত্রী বলেন, মানুষের জীবন রক্ষার জন্য হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরিয়ে নিতে বহুদিন ধরে কথা চলছে। কিন্তু কেউ কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এ বিষয়ে আমরা কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছি। আজ চারটি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিপূরণের চেক দিয়ে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরানোর কাজ বাস্তবে রূপ নিলো। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোকে পর্যায়ক্রমে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে চামড়া শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ মুহূর্তে যারা আগে ব্যবসা শুরু করতে পারবেন, তারা ইউরোপ-আমেরিকার বাজার দখল করতে পারবেন।
শিল্পমন্ত্রী আরো জানান, বরাদ্দপ্রাপ্ত একশ ৫৫টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে একশ ৫২টি প্রতিষ্ঠান খসড়া পরিকল্পনা জমা দিয়েছে। এরই মধ্যে সেগুলো অনুমোদন করেছে বিসিক। ৫১টি শিল্প ইউনিট পাইলিংসহ কারখানা নির্মাণের মূল কাজ শুরু করেছে। ৩৯টি শিল্প ইউনিট সীমানা প্রাচীর ও নিরাপত্তা রক্ষীদের কক্ষ নির্মাণ করেছে। এছাড়া ৩২টি শিল্প ইউনিট শুধু সীমানা প্রাচীর এবং ২৬টি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা রক্ষীদের কক্ষ নির্মাণ করেছে।
অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চামড়া শিল্পগনরীতে একশ ৫৫টি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুইশ ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণের অর্থ বিতরণের জন্য বিএফএলএলএফইএ’র অধীন ৫৫টি শিল্প ইউনিটের ক্ষতিপূরণ বাবদ একশ ৪০ কোটি ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা নিরূপণ করা হয়েছে।
এছাড়া বিটিএ’র অধীন ৯৫টি শিল্প ইউনিটের ক্ষতিপূরণ বাবদ একশ ৯ কোটি ৩৩ লাখ ২৩ হাজার টাকা নিরূপণ করা হয়েছে। এ দুইটি ইউনিটের মোট দুইশ ৪৯ কোটি ৯০ লাখ ৭১ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ব্যয় নিরূপণ করা হয়।
ক্ষতিপূরণের দিতে হাজারীবাগ সরেজমিন পরিদর্শন করেছে এ বিষয়ে গঠিত কমিটি। এরপর চারটি শিল্প ইউনিটের অস্তিত্ব খুঁজে না পাওয়ায় ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়নি। এছাড়া অংশীদারদের মতবিরোধের কারণে আরো একটি ইউনিটের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়নি।
অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, এ পর্যন্ত ১৭টি শিল্পকারখানা মালিক ক্ষতিপূরণের জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে প্রকল্প কর্তৃপক্ষের কাছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার চারটি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিপূরণের ১০ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থের চেক দেওয়া হয়। বাকি ১৩টি আবেদনপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৫