খুলনা: হরতাল ও অবরোধে অন্যান্যদের মতো বিপাকে পড়েছে খুলনার ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। মাঘের শীতের প্রকোপ না থাকলেও রাজনৈতিক উত্তাপে বেচা-কেনা নেই এখানকার ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের।
নগরীর ফেরিঘাট মোড়ের হকার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, লাগাতার হরতাল আর অবরোধে বাইরে থেকে ক্রেতারা আসছেন না। কয়েক মাস আগে যেখানে একজন হকারের দৈনিক বিক্রি হতো ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। বর্তমানে এ অচলাবস্থার কারণে কোনো কোনো দিন ক্রেতাও হয় না। ফলে নগরীর ফুটপাতের হাজারও দোকানিরা অলস সময় পার করছে।
তিনি বলেন, হরতাল-অবরোধে কখন কোথায় বোমা হামলায় সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়, সেই শঙ্কায় থাকি।
কয়েকজন হকার আক্ষেপ করে বলেন, এখনও আপাতত খেয়ে না খেয়ে দিন চলছে। এভাবে হরতাল-অবরোধ চলতে থাকলে সব শেষ হয়ে যাবে। হয়তোবা শেষ পর্যন্ত পথে বসতে হবে।
শীতপোষাক বিক্রেতা আব্দুল কাদের বলেন, প্রায় তিন চার বছর ব্যবসা করছি। এ বছরের মতো এত খারাপ অবস্থা কখনও হয়নি। আগে বেচাকেনা ভালো হলেও বর্তমান পরিস্থিতি একেবারে খারাপ। যে বেচাকেনা হয় তাতে মহাজনের কাছে দেনা হচ্ছি প্রতিদিন।
তিনি জানান, মহাজনের কাছ থেকে প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়ে ব্যবসায় নামি। এখন যে মন্দার বাজার চলছে তাতে প্রতি মাসে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দেনা হচ্ছি। পরিবার-পরিজন নিয়ে ভীষণ অর্থ কষ্টে ভুগছেন বলেও জানান তিনি।
ফেরিঘাট হকার মার্কেটে কথা হয় বিক্রেতা লিয়াকত আলীর সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, দ্যাশের (দেশের) তো বারডা (১২টা) বাইজ্যা (বেজে) গেছে। হরতাল-অবরোধ উইঠ্যা (উঠে) যাক দেশের ভাবমূর্তি ফিরে আইসবে। এইভাবে যদি চইলতে থাকে তবে হাতে হারিকেন ধরি হাঁটতে হইবো।
তিনি আরও জানান, এখন প্রতি মাসে দেনাই হইচ্ছি। মহাজনের কাছে ধরা। এমনিতে তো শীত নাই, এতে শীতের কাপড়ের কদরও নাই। এই হরতাল-অবরোধ দিয়া আমাগো বেচা-কেনার মাথায় হাত। আমাগো ‘বিরোধী দলে’র নেত্রী ম্যাডাম খালেদা কি পারে না হরতাল-অবরোধ উঠ্যাইয়া নিতে?
এমনি ভাবে আরও জড়ো হওয়া বিক্রেতা, এটিএম বুথের প্রহরীসহ পথচারীরা বিলাপ করছিলেন সেখানে। তারা বলেন, আমরা দেশের মানুষ নিরাপত্তা চাই, স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়ে স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে চাই না।
বাংলাদেশ সময়: ০১১৩ঘণ্টা ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৫