সাতক্ষীরা: ২০দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও হরতালে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। হরতাল-অবরোধে দেশের অন্যান্য বন্দরের কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়লেও ভোমরা বন্দরে বরং চাপ বেড়েছে।
বর্তমানে ব্যবসায়ীরা অন্যান্য বন্দরের তুলনায় ভোমরা বন্দর দিয়ে পণ্য সামগ্রী আমদানি-রফতানিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। আর এতে এ বন্দর দিয়ে চাল, পেঁয়াজ, ফলমূলসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রীর আমদানি বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, অনির্দিষ্টকালের অবরোধ-হরতালেও প্রভাব পড়েনি ভোমরা বন্দরে। রাজনৈতিক অস্থিরতায় অন্যান্য বন্দরের কার্যক্রম যেখানে শিথিল হয়ে পড়েছে, সেখানে ভোমরা বন্দরে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩ থেকে ৪শ ট্রাক ঢুকছে।
ভোমরা স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশন সূত্র জানায়, এ বন্দরে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে প্রায় ২১৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। যা পুরো অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দুই গুণ।
সূত্র আরও জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এনবিআর ভোমরা বন্দর থেকে ১৬৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। এর মধ্যে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম সাত মাসে রাজস্ব আহরণ হয়েছে প্রায় ২১৫ কোটি টাকা। এ বন্দরে এর আগে কখনও এতো বেশি রাজস্ব আদায় হয়নি।
এর মধ্যে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে ১২ কোটি ৭ লাখ ৩৬ হাজার ৭৬২ টাকা, আগস্টে ৩১ কোটি ৪৬ লাখ ৩৮ হাজার ১৩৫ টাকা, সেপ্টেম্বরে ৩৩ কোটি ৪৬ লাখ ৩ হাজার ৯৩৩ টাকা, অক্টোবরে ২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা, নভেম্বরে ৩২ কোটি ৩২ লাখ টাকা, ডিসেম্বরে ৩০ কোটি ৪০ লাখ ৩ হাজার ৯২০ টাকা এবং ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ ৫০ কোটি ৬১ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
বন্দরের শ্রমিক নেতা জিয়াউর রহমান জিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ভোমরা বন্দরের পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক। আগে যে পরিমাণ ট্রাক ঢুকতো, এখন তার চেয়ে বেশি ঢুকছে। শ্রমিকরাও বেশি বেশি কাজ পাচ্ছে। তবে ট্রাক ভাড়া বেড়েছে। চালকরা মাল আনা-নেওয়া করতে চাচ্ছে না। বেশি ভাড়া দিলে তারা রাজি হচ্ছে।
ভোমরা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় বন্দরে সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে কাজ চলছে। ব্যবসার সার্বিক পরিবেশ বজায় রাখতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি বর্জনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য হলো অর্থনীতির প্রাণ। রাজতৈনিক দলগুলোর অবশ্যই উচিত ব্যবসা-বাণিজ্যের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করা।
ভোমরা স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার (শুল্ক) তারেক মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, ভোমরা বন্দরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় অন্য বন্দরে কাজ স্বাভাবিকভাবে না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ভোমরা বন্দরে প্রতি ঝুঁকছে। এতে রাজস্ব আয় বেড়েছে। রাজস্ব আয়ের এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থ-বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি রাজস্ব আদায় হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৫