ঢাকা: গ্রামীণ ফোন লিমিটেড ২০১৪ সালে ১০ হাজার ২৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে। ৪৪ লাখ নতুন গ্রাহক যোগ হয়ে মোট গ্রাহক এখন ৫ কোটি ৫০ লাখ।
২০১৪ সালের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সোমবার(৯ ফেব্রুয়ারি’২০১৫) সোনারগাঁও হোটেলের সুরমা হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরেন গ্রামীণ ফোনের সিইও রাজিব শেঠি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ট্যাকস দেওয়ার পর কোম্পানির নিট মুনাফা ১৯.৩ শতাংশ মার্জিনসহ ১৯৮০ কোটি টাকা এবং ইপিএস ১৪.৬৭ টাকা। থ্রিজি নেটওয়ার্ক স্থাপনে এবং টু-জি নেটওয়ার্কের ধারণক্ষমতা ও সক্ষমতা উন্নয়নে বিনিয়োগ ১৫২০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধনের ৬৫ শতাংশ চূড়ান্ত মূনাফা ঘোষণা করেছে কোম্পানি।
রাজিব শেঠি বলেন, ২০১৩ সালে আমরা ৫ কোটি গ্রাহক এবং ১০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের ঐতিহাসিক মাইল ফলক অতিক্রম করেছে গ্রামীণ ফোন। ২০১৪ সালে দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর হিসেবে আমাদের অবস্থান আরও দৃঢ় হয়েছে এবং আমরা ২০১৫-তে আরো ভালো করার লক্ষ্য স্থির করেছি।
গ্রামীণফোন লিঃ ২০১৪ সালে ১০হাজার ২৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৬.৩ শতাংশ বেশি। পূর্বের বছরের তুলনায় সেবা থেকে অর্জিত রাজস্ব বেড়েছে ৫.৯ শতাংশ এবং গ্রাহকদের ব্যবহার্য ডিভাইস এবং অন্যান্য রাজস্ব বেড়েছে ১৪.১ শতাংশ।
সেবা থেকে রাজস্ব আয় প্রবৃদ্ধি প্রধানত ডাটা ও মূল্য সংযোজিত সেবা থেকে এসেছে। তবে আন্তর্জাতিক কল টার্মিনেশন রেট কমে যাওয়ায় রাজস্ব আয় কিছুটা বাধার সম্মুখীন হয়।
রাজিব শেঠি আরও বলেন, গত বছর গ্রামীণফোনে নতুন গ্রাহক যোগ হয়েছে ৪৪ লাখ যার ফলে বছর শেষে গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৫০ লাখে। জাতীয় গ্রাহক প্রবৃদ্ধি ৫.৮ শতাংশ হলেও গ্রামীণফোনের প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.৩ শতাংশ ফলে কোম্পানির মার্কেট শেয়ার ১.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪২.৮ শতাংশ হয়েছে।
আয়কর দেওয়ার পর ২০১৩ এর শতকরা ১৫.২ ভাগ মার্জিনসহ ১৪৭০ কোটি টাকা মুনাফার তুলনায় ২০১৪ তে নিট মুনাফা হয়েছে শতকরা ১৯.৩ ভাগ মার্জিনসহ ১হাজার ৯২০ কোটি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১৪.৬৭ টাকা যা ২০১৩ সালে ছিল ১০.৮৯ টাকা। এর ফলে শেয়ার প্রতি আয় ৩৪.৭ শতাংশ বেড়ে গেছে তবে ২০১৩ এর ১ সেপ্টেম্বর জিপিআইটি এর বিক্রয় থেকে আয় এবং কর্পোরেট ট্যাক্স ৫ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার হিসেব বাদ দিলে প্রকৃত আয় বেড়েছে ১২ শতাংশ।
গ্রামীণফোন ২০১৩ এ তার থ্রিজি নেটওয়ার্ক স্থাপন, ২জি নেটওয়ার্ক এর মানোন্নয়ন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে ১৫২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
সিইও বলেন, দেশের বৃহত্তম কর দাতা গ্রামীণফোন ২০১৩ সালে সরকারি কোষাগারে কর, ভ্যাট, শুল্ক ও লাইসেন্স ফি হিসেবে ৫ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা দিয়েছে যা কোম্পানির মোট রাজস্ব আয়ের ৫৭.৪ শতাংশ।
সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি থেকে ডিজিটাল উদ্যোক্তাদের সহায়তা এবং সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যে দিয়ে গ্রামীণফোন ২০১৪ সালে সামাজিক ক্ষমতায়ন এবং দেশের তরুণদের একটি সমৃদ্ধ আগামীর জন্য প্রস্তুত করতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রামীণফোন লিঃ এর পরিচালকমণ্ডলী ২০১৪ সালের জন্য পরিশোধিত মূলধনের ৬৫ শতাংশ(প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারের জন্য ৬.৫ টাকা) চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
এর ফলে ২০১৪ সালের জন্য মোট নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ দাঁড়ালো পরিশোধিত মূলধনের ১৬০ শতাংশ(প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারের জন্য ১৬ টাকা), যার মধ্যে রয়েছে আগস্ট ২০১৪ এ পরিশোধ করা ৯৫ শতাংশ অন্তবর্তী নগদ লভ্যাংশ(প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারের জন্য ৯.৫ টাকা)।
রেকর্ড তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তে যারা শেয়ারহোল্ডার থাকবেন তারা এই লভ্যাংশ পাবেন যা ২১ এপ্রিল ২০১৫ এ অনুষ্ঠতব্য বার্ষিক সাধারণ সভার দিন শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের উপর নিভরশীল।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৫