ঢাকা: প্রতিমাসে ১০ জন আয়করদাতাকে সম্মানিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
যারা কর নিয়ে দুঃচিন্তা, হতাশা আর ভয়ে আছেন, তাদের উৎসাহিত করতেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্মেলন কক্ষে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) নেতাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ সব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, যারা আয়কর দেন এমন ১০ জনকে প্রতিমাসে সম্মাননা দেওয়া হবে। সম্প্রতি, ৫টি কর অঞ্চল পরিদর্শন করে কর্মকর্তাদের এ নির্দেশনা দিয়েছি। এ ছাড়া সব কর অঞ্চলকে সর্বোচ্চ কারদাতা ১০ জনের তালিকা পাঠাতে বলেছি। ওই সব করদাতাদের চলতি মাসের শেষের দিকে এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে সম্মানিত করা হবে।
আমদানি-রফতানিতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং করবেন না। আমদানি-রফতানিতে কোনো অসৎপন্থায় লিপ্ত হবেন না। কোনো ধরনের আন্ডার ইনভয়েসিং বা ওভার ভয়েসিং করবেন না। আমদানি-রফতানিতে উত্তম চর্চা করবেন।
এনবিআর ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দেবে উল্লেখ করে নজিবুর রহমান বলেন, কন্টেইনার ও এলসি সঠিকভাবে করতে হবে। রেয়াতের যেন অপব্যবহার না হয়। এনবিআর থেকে আপনারা যত ধরনের সুবিধা চান, আমরা তত সুবিধা দেবো।
তিনি বলেন, রাজস্ব ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীরা যে উন্নয়ন দেখতে চান, সে ধরনের উন্নয়নে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
আয়কর প্রদানে উৎসাহিত করতে প্রতি করাঞ্চলে ১০ জনকে প্রতিমাসে সম্মাননা দিয়ে উৎসাহিত করা হবে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, যারা কর নিয়ে দুঃচিন্তা, হতাশা আর ভয়ে আছেন, তাদের উৎসাহিত করতেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে এ সম্মাননা দেওয়া হবে।
করের বোঝা বাড়ানো হবে না আশ্বাস দিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, প্রধানমন্ত্রী জনসাধারণের ওপর করের বোঝা না বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা করের বোঝা নয়, আওতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। সে ক্ষেত্রেও ব্যবসায়ীরা বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশে জনবান্ধব কর প্রশাসন গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, এরই অংশ হিসেবে আয়কর মেলা আর জেলা পর্যায়ে নয়, আগামীবছর থেকে প্রতিটি উপজেলায় আয়কর মেলার আয়োজন করা হবে।
ব্যবসায়ী সংগঠনের সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, মেলার মাধ্যমে মানুষকে কর প্রদানে উদ্ধুদ্ধ ও সচেতন করে করের আওতা বাড়ানো হবে।
ভ্যাট আইন সম্পর্কে চেয়ারম্যান বলেন, ভয় পাওয়ার কারণ নেই। এফবিসিসিআই ও এনবিআর যৌথভাবে কাজ করছে। আশা করি, খুব শিগগিরই কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।
কাস্টমস আইনকে আধুনিক করার জন্য সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, একজন মুখ্য সচিব আধুনিক কাস্টমস আইন নিয়ে বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রীর কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
আধুনিক কাস্টমস আইন হলে ব্যবসায়ীদের কোনো অভিযোগ থাকবে না বলে জানান নজিবুর রহমান।
সহিংসতার বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সাময়িক সহিংসতায় সরকার আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকারের উদ্যোগ সার্থক হবে। ব্যবসায়ীরা নির্বিঘ্ন পরিবেশে ভবিষ্যতে ব্যবসার করার সুযোগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সব ধরনের উদ্যোগ নেবে।
সৌজন্য সাক্ষাতে ডিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে চলমান সহিংসতার জন্য ব্যবসায়ীদের ৫০ শতাংশ কর মওকুফসহ আগামী অর্থবছরের জন্য ২৮টি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়।
সৌজন্য সাক্ষাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর আলম, পারভেজ ইকবাল, ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ, সহসভাপতি মো. শোয়েব চৌধুরীসহ ডিসিসিআই পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৫