সাভার (ঢাকা): ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ ও হরতালে সবজি চাষি ও ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।
পরিবহন সংকটের কারণে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে রাজধানীসহ এর আশপাশের এলাকায় সবজি আসছে তুলনামূলক কম।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সাভারের কয়েকটি আড়তে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
যশোর থেকে সাভারের গেণ্ডা কাঁচামালের আঁড়তে টমেটো নিয়ে আসা চাষি আলাউদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, এ বছর দশ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের টমেটো চাষ করেছেন তিনি। মৌসুমের শুরুতেই অবরোধ ও হরতাল দেওয়ায় সময় মতো টমেটো বাজারজাত করতে না পারায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি।
টমেটো পাকার আগেই বাজারজাত করতে হয়, না হলে জমিতেই পচে যায়। পরিবহন সংকট ও সহিংসতার ভয়ে সময় মতো বাজারজাত করতে না পারায় ৪ বিঘা জমির টমেটো নষ্ট হয়েছে তার। তাই এ বছর লাভের মুখ দেখার পরিবর্তে বড় ধরনের লোকসানের বোঝা বইতে হবে তাকে।
যশোরের চুয়াডাঙ্গা থেকে বাইপাইল কাঁচামালের আড়তে আসা সবজি চাষি মনিরুল ইসলাম জানালেন তার দুঃখের কথা, এ বছর ৫ বিঘা জমিতে ফুলকপি ও ৩ বিঘা জমিতে বাঁধা কপি চাষ করেছিলেন।
পরিবহন সংকট আর হরতাল-অবরোধে চলা নাশকতার ভয়ে তার চাষ করা সবজি সময় মতো বাজারজাত করতে পারেননি। ফলে অধিকাংশ ফুলকপি জমিতেই নষ্ট হয়েছে।
অধিক পরিবহন ভাড়া দিয়ে কিছু সবজি বাজারে বিক্রির জন্য আনা হলেও নিম্নমানের হওয়ায় আশনুরূপ দাম পাচ্ছেন না। এ বছর তার যে ক্ষতি হবে, কৃষক হিসেবে তা কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন হবে বলে তিনি জানান।
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরের সবজি চাষি নিজাম উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, তিনি প্রতিবছর নিজের এবং কটে রাখা প্রায় পঞ্চাশ বিঘা জমিতে বিভিন্ন প্রকার সবজির চাষ করে থাকেন। পনের বছরের সবজি চাষের অভিজ্ঞতায় তাকে কখনও লোকসানের মুখ দেখতে হয়নি। কিন্তু এ বছর প্রায় ১০ লাখ টাকা লোকসান হবে তার।
আড়ৎ মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের ওপরও হরতালের প্রভাব পড়েছে ব্যাপক হারে। টানা আবরোধ ও হরতালের কারণে আড়তগুলোতে সবজির আমদানি তুলনামূলক কমে গেছে।
এদিকে, গেণ্ডা কাঁচা বাজার আড়তের একাধিক আরতদার বাংলানিউজকে বলেন, ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য আড়তে নিয়মিত কাঁচামাল যোগান দিতে কমিশনের হার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ অধিক পরিবহন ভাড়া দিয়েই চাষি ও ব্যবসায়ীরা লোকসানের শিকার হচ্ছে। এ কারণেই ক্ষেত্র বিশেষ কমিশন কম কাটা হচ্ছে বলেই তারা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৫