ঢাকা: আগে প্রকল্পের তালিকা অথবা প্রকল্পের ধরন দেখে আরও ৮ হাজার বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ( ১ ডলার সমান ৮০ টাকা) ঋণ দিতে আগ্রহী ভারত।
তবে ঋণ নিতে হলে আগে বাংলাদেশকে প্রকল্পের তালিকা ঠিক করতে হবে।
রোববার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার সময় রাজধানীর শেরে বাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধি দলের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ বৈঠক।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব আসিফ-উজ-জামান ও ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন যুগ্ম সচিব অলক সিনহা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সুপ্রিয়া রঙ্গনাথুন ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র, রেলসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভারত কত ডলার ঋণ দিতে চায় বাংলাদেশ তার একটি ফিগার জানতে চেয়েছে।
কিন্তু এর আগে ভারত জানতে চেয়েছে কোন কোন প্রকল্পে ঋণ দরকার তার একটি তালিকা। প্রকল্পের ধরন অথবা তালিকা অনুযায়ি যদি ১০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ দরকার হয় তাতেও আগ্রহী ভারত। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশ কত ডলার ঋণ নেবে সেই বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
ইআরডি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে প্রকল্প চূড়ান্ত করবে। এরপরে প্রকল্পের তালিকা ভারতের কাছে দেওয়া হবে। এর পরেই ঋণের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
বৈঠক প্রসঙ্গে ইআরডি অতিরিক্ত সচিব আসিফ-উজ-জামান বাংলানিউজকে বলেন, বৈঠক ১০০ কোটি ডলার ঋণের বিষয়ে কোন কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ভারত আমাদের আরও ঋণ দিতে আগ্রহী। পরে প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা ভারতকে সিদ্ধান্ত দেব। নতুন করে আমাদের মধ্যে আরও আলোচনা হবে।
২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং। ওই বছরের ৭ আগস্ট দেশটির এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে এ বিষয়ে ইআরডির ঋণচুক্তি হয়। তার পরই ভারত বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ঋণ দেয় কোন প্রকার পূর্ব ঘোষিত প্রকল্পের তালিকা ছাড়াই ।
বাংলাদেশ প্রয়োজন অনুযায়ী উন্নয়ন প্রকল্পে টাকা খরচ করেছে। তবে এবার ঋণ দেওয়ার আগে প্রকল্পের তালিকা চায় ভারত। ভারতীয় ঋণে ১৪টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ প্রকল্পই রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত।
পরবর্তী পর্যায়ে ভারতীয় ঋণে আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ঋণ নেবে বাংলাদেশ। যাতে করে ভারতীয় ঋণে দেশের জন্য আরও কিছু জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নেওয়া যায়। ভারতীয় ঋণে চলমান প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এ ঋণের আওতায় হাতে নেয়া প্রকল্পে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজের সুযোগ দেওয়াসহ বেশকিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে। ভারত ৩ থেকে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিতে চায়।
এর বাইরে থাকছে কমিটমেন্ট ও ম্যানেজমেন্ট আট বছর বা এর কম মেয়াদে ঋণ নিতে চাইলে লন্ডন ইন্টার ব্যাংক রেটের (লাইবর) সঙ্গে আরও ২ দশমিক ২৫ শতাংশ যোগ করে সুদহার ধরা হবে।
৯ থেকে ১২ বছরমেয়াদি ঋণে লাইবরের সঙ্গে যোগ হবে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর ১৩ থেকে ১৫ বছরমেয়াদি ঋণে সুদহার হবে লাইবরের সঙ্গে আরও ৩ শতাংশ।
সবমিলিয়ে এ ঋণের সুদহার হবে গড়ে সাড়ে ৩ থেকে ৪ শতাংশ। অপরদিকে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক।
সংস্থাটি শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ নিয়ে ঋণ দেয়। ৬ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে বিশ্বব্যাংকে ঋণ পরিশোধ করতে হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৫