ঢাকা: মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ফাঁকিবাজ অসাধু আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর মগবাজারে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা জানান।
অসাধু ব্যবসায়ী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে তিনি বলেন, কারা জনগণের কাছ থেকে মূসক আদায় করে জমা দিচ্ছেন না তা তদন্ত করে বের করা হবে।
এসব অসাধু ব্যবসায়ী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে মূসক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
মূসক গোয়েন্দারা সঠিকভাবে কাজ করলে মূসক লক্ষ্যমাত্রাই নয় তা বহুগুণে ছাড়িয়ে যাবে এবং সৎ ব্যবসায়ী ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান উৎসাহিত হবে বলে মনে করেন তিনি।
আগামীতে রাজস্ব আয়ের ৫৫ শতাংশ মূসক ও ৪৫ শতাংশ শুল্ক ও আয়কর থেকে আসবে। ৫৫ শতাংশ কিভাবে অর্জিত হবে সে ব্যাপারে কাজ চলছে বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।
হরতাল-অবরোধে মূসক আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, ডিসেম্বর-জানুয়ারির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি সাময়িকভাবে চালেঞ্জের মুখোমুখি আছে।
অর্থনীতি এখনো বিপদগ্রস্ত হয়নি। অর্থনীতির আকাশে কালো মেঘ অচিরেই কেটে যাবে। দেশের অর্থনীতি ফিনিক্স পাখির মতো ঘুরে দাঁড়াবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মূসক আদায়ে কঠোর ব্যবস্থা সম্পর্কে মো. নজিবুর রহমান বলেন, মূসক আইন-২০১২ বাস্তবায়নের প্রস্তুতি সম্পন্ন। নতুন আইনে ভ্যাট ফাঁকি রোধ হবে। সময় লাগবে।
রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে কর্মকৌশল নেওয়া হয়েছে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আদায়ে যেসব কর্মকর্তা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করছেন তাদের নির্বাচিত করা হয়েছে।
তাদের বিশেষ ‘প্রণোদনা’ ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ন্যস্ত করা হবে। যারা মাঝারি ধরনের পারফর্ম করছেন তাদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ব্যর্থদের ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুরুত্বপূর্ণ পদে কোনো নন-পারফরমারকে রাখা হবে না বলেও জানান তিনি।
চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে কমিশনারদের কাজের মূল্যায়ন চাটুকারিতা নয় পারফর্মের ভিত্তিতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে আন্তর্জাতিক সব রাজস্ব বোর্ডের মানের ভিত্তিতে পরিচালিত করতে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান নজিবুর।
রাজস্ব বোর্ডের অতীতে ‘টিম ওয়ার্ক’ দূর্বলতা ছিল স্বীকার করে তিনি বলেন, এটা কাটিয়ে উঠতে রাজস্ব বিভাগের সকল কর্মকর্তা টিমওয়ার্কের মধ্যে কাজ করছেন।
‘ফাইভ আই’ ভিত্তিতে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে রাজস্ব বাড়াতে কর্মকর্তারা ‘ফাইভ সি’ ও ‘ফাইভ এফ’ এর ভিত্তিতে কাজ করছেন বলেও জানান চেয়ারম্যান।
এ সময় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল হোসেন, মূল্য সংযোজন কর অধিদফতরের মহাপরিচালক মারগূব আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৫