যশোর: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা চলমান হরতাল-অবরোধে দেশের বৃহত্তম সারের মোকাম যশোরের নওয়াপাড়ায় প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।
ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত সার মজুদ থাকা সত্ত্বেও কেনাবেচা কমে যাওয়ায় হতাশ অধিকাংশ ব্যবসায়ী।
ব্যবসায়ীদের মতে, সারাদেশের ২৫ থেকে ৩০টি সার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কমপক্ষে ২০টিই নওয়াপাড়ার। ফলে সারাদেশের মোট চাহিদার ৮০ ভাগ নন ইউরিয়া সার যশোরের নওয়াপাড়া থেকে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু হরতাল-অবরোধে কেনাবেচা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
নওয়াপাড়ার একাধিক সার আমদানিকারক বাংলানিউজকে বলেন, ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসকে সার বিক্রির ভরা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে নওয়াপাড়া মোকামে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার লেনদেন হয়। সেখানে হরতাল ও অবরোধের সময় কমে এসেছে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় কোটি টাকায়।
নওয়াপাড়া সার ও খাদ্যশস্য সমিতির সহ-সভাপতি আবদুল আউয়াল বাংলানিউজকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে সারের ভরা মৌসুমে প্রতিদিন কমপক্ষে ৯০ হাজার বস্তা সার ২৫০ ট্রাকে লোড করে উত্তরবঙ্গসহ সারাদেশে পাঠানো হয়। কিন্তু হরতাল-অবরোধে ভাঙচুর, পেট্রোল বোমা হামলা, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন নাশকতার আশঙ্কায় অধিকাংশ ট্রাক মালিক ও শ্রমিকরা দূরে যেতে অনিহা প্রকাশ করছে। আবার অনেকে দ্বিগুণ ভাড়া নিয়ে যেতে রাজি হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন এ মোকামে শুধুমাত্র সার ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে ৫০ লাখ টাকা।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হরতাল-অবরোধের আগে নওয়াপাড়া থেকে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক ভাড়া ছিল ১২ হাজার টাকা। যা বর্তমানে ১৮ হাজার হয়েছে। এছাড়া নওয়াপাড়া থেকে বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় আগে সর্বোচ্চ ট্রাক ভাড়া ১৫ হাজার হলেও বর্তমানে তা ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা হয়েছে।
ফলে একদিকে, ট্রাক ভাড়া বৃদ্ধি ও বেচাকেনা কম হওয়া, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন এবং ব্যাংক সুদের হিসেবে প্রতিদিন প্রায় অর্ধকোটি টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে সার ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও যশোর জেলা শাখার সভাপতি শাহ জামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমদানিকৃত সার দেশের বিভিন্ন এলাকা বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতে পাঠাতে হিমশিম খাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ট্রাক ভাড়া দ্বিগুণ হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও বিভিন্ন খরচ বহন করে লাভের মুখ দেখতে পারছে অনেকেই। এতে প্রতিদিন প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হচ্ছে তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৫