ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি (বসুন্ধরা) থেকে: বৈশাখের আনন্দকে কয়েক গুণ বাড়াতে বৈশাখী উৎসবের আয়োজন করছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে ১৩ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত টানা চার দিন চলবে এই উৎসব।
রোববার (১ মার্চ, ২০১৫) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বসুন্ধরা সিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান আয়োজকরা।
তারা জানান, এই চার দিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা (প্রয়োজন বিবেচনায় রাত ৯টা) পর্যন্ত চলবে উৎসব।
আর এ উপলক্ষে ‘আগে এলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে স্টল বুকিং চলছে। ঢাকার অন্যতম অভিজাত এলাকা কুড়িল ফ্লাইওভার ও পূর্বাচল রোডের কাছেই এই সিটির ‘গুলনকশা’ ও ‘পুষ্পগুচ্ছ’ হলে স্টল বুকিং দেওয়া যাবে।
আয়োজকরা জানান, নিরাপদ ও অভিজাত পরিবেশে সবাই যেন আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সেই ব্যবস্থাই রাখা হবে।
সম্মেলনে উৎসবের বিস্তারিত খুঁটিনাটি দিক তুলে ধরেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেন, বাঙালি সংস্কৃতি সবার কাছে তুলে ধরতে এই আয়োজন। আমরা মনে করি, এই উৎসবটি এবারের বৈশাখে মূল আকর্ষণ হয়ে উঠবে।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ভারত থেকে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুরোধ এসেছে। ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোও একটু স্বস্তির জায়গা খোঁজেন। তাদের অনুরোধে কিছু স্থান আলাদা রাখা হবে।
মোস্তাফিজ জানান, দর্শনার্থীদের প্রবেশমূল্য প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া থাকবে আকর্ষণীয় র্যাফেল-ড্র আয়োজন।
তিনি জানান, সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য সিটির পশ্চিমদিকে নাগরদোলা ও সার্কাস শো, পুতুল নাচ থাকবে সম্পূর্ণ ফ্রি। এছাড়া সারাদিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে এবং সেটিও থাকবে সবার জন্য উন্মুক্ত। এই অনুষ্ঠানে ওপার বাংলার শিল্পীরাও অংশ নেবেন।
মোস্তাফিজ বলেন, আমাদের সংস্কৃতির বিষয়টি মাথায় রেখেই সার্বিক আয়োজন। দেশের সেরা শিল্পীদের এই মেলায় আনার চেষ্টা করছি। যাতে আগতরা প্রাণের উৎসবে পরিপূর্ণ আনন্দ পান।
গ্রুপের প্রেস ও মিডিয়া উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, পেশা, দায়িত্ব, বয়স, শারীরিক অবস্থার কারণে অনেকে চাইলেও রমনার বটমূল বা অন্য উৎসবগুলোতে যেতে পারেন না। এছাড়া বিদেশি কূটনীতিকরাও অনেক সময় সেখানে যেতে পারেন না। তাই সেসব মানুষের স্বচ্ছন্দ্ উপস্থিতির সুযোগ তৈরি করতেই এই আয়োজন।
বসুন্ধরা গ্রুপের মার্কেটিং অ্যান্ড ব্র্যান্ডিং বিভাগের প্রধান এম এম জসিমউদ্দিন বলেন, চৈত্র-সংক্রান্তির আনন্দের সঙ্গেই এই উৎসব শুরু হবে। বৈশাখী মেলায় গিয়ে নিজেদের গাড়ি পার্কিং-এর সুবিধা যারা চান, তাদের দুশ্চিন্তাও এখানে লাঘব হবে।
আয়োজকদের মত, রমনার বটমূলে যে ঐতিহ্যবাহী উৎসব, সেটির বিকল্প নয়, বরং বসুন্ধরায় আয়োজিত উৎসবটিকে ব্যতিক্রমী ও ভিন্নধর্মী আয়োজন হিসেবে সবাই পছন্দ করবেন।
তারা জানান, সিটির হলগুলো পহেলা বৈশাখের আগেই সম্পূর্ণ প্রস্তুত হিসেবে পাওয়া যাবে।
ওপেন স্কাই মুভিজ অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট এবং অ্যাড এশিয়া আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোর সমন্বয়ে থাকবে।
ওপেন স্কাই মুভিজ অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট’র ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইয়াকুব আলী প্রিন্স বাংলানিউজকে জানান, আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানগুলো আয়োজন হবে রাজদর্শন হলে। ওপার বাংলার পক্ষ থেকে উদ্যোগে সহযোগিতা করছেন তরুণ চক্রবর্তী। তিনি অ্যাড এশিয়ার চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, সার্কের দেশগুলো, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, চীন, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, থাইল্যান্ড থাকছে এই আয়োজনে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো ‘নবরাত্রি’ হলে অনুষ্ঠিত হবে।
আয়োজকরা জানান, নন-এসি স্টল থাকবে ১০০টি (প্রতিটি ২০ হাজার টাকা), এসি ২০০টি (প্রতিটি ৫০ হাজার টাকা), এসি কর্নার স্টল ৬০ হাজার টাকা করে ভাড়া দেওয়া হবে।
স্টলগুলোর আয়তন ‘আট ফুট বাই আট ফুট’ করে হবে বলেও জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা (কোষাধ্যক্ষ) মো. ময়নাল হোসেন চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৭ ঘন্টা, মার্চ ০১, ২০১৫