ঢাকাঃ রাজনৈতিক অস্থিরতায় জুলাই-ফেব্রুয়ারি মাসে ডি-৮ বা উন্নয়নশীল ৮ দেশে বাংলাদেশের রফতানি কমেছে ১১শ’ ৬৮ কোটি টাকা।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর(ইপিবি) একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানান, গত ৩বছর ধরেই চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা।
ডি-৮ ভূক্ত দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান,মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক।
এসব দেশ এখন বাংলাদেশের ওপর ভরসা রাখতে পারছে না। ডি-৮ ভূক্ত দেশ ইন্দোনেশিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া ও তুরস্ক আগে অনেক বার বিভিন্ন বৈঠকে বাংলাদেশকে সতর্ক করেছিলো রাজনৈতিক অস্থিরতার বিষয়ে। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় এই হাজার কোটি টাকার রফতানি বাংলাদেশকে হারাতে হয়েছে।
কিন্তু এসব বিষয়ে ভিন্নমত ইপিবি’র সহ-সভাপতি শুভাশিস বসুর। মূলত ডি-৮ ভূক্ত দেশসমূহ বাংলাদেশের প্রতিযোগী বলেই রফতানি কমে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারণে ডি-৮ ভূক্ত দেশসমূহে আমাদের রফতানি কমেনি। আমরা এসব দেশে গার্মেন্ট পণ্য, জুতাসহ বেশ কিছু পণ্য রফতানি করি। আর বিশ্ববাজারে এসব পণ্যের বাংলাদেশের প্রতিযোগী হলো এই ডি-৮ ভূক্ত দেশসমূহ। তাছাড়া আমরা যেসব পণ্য তাদের দেশে রফতানি করি তারা নিজেরাই এখন সেসব তৈরি করছে।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও ডি-৮ দেশে রফতানি করতে ততোটা উৎসাহী নয় বলে জানান শুভাশিস বসু। তিনি বলেন, ডি-৮ ভূক্ত দেশসমূহে রফতানির ক্ষেত্রেও অনেক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী উৎসাহ হারাচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি এসব দেশে রফতানি বাড়াতে। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ায় ৫২৫টি পণ্যের রফতানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তাছাড়া উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আমরা মেলার আয়োজন করছি যাতে আমাদের পণ্য প্রদর্শন করে রফতানি বাড়ানো যায়।
ইপিবি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি মাসে ডি-৮ ভুক্ত দেশসমূহে রফতানি হয়েছে ৬৭ কোটি ২ লাখ ৪ হাজার ৮৪৯ ডলার মূল্যের পণ্য যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিলো ৮১ কোটি ৬২ লাখ ১৮ হাজার ৩৭৫ ডলার। এ হিসাবে ডি-৮ ভুক্ত দেশের রফতানি কমেছে ১৪ কোটি ৬০ লাখ ১৩ হাজার ৫২৬ ডলার যা টাকার অঙ্কে প্রায় ১১শ ৬৮ কোটি টাকা।
যে চারটি ডি-৮ ভূক্ত দেশে রফতানি কমেছে সেগুলো হলো ইন্দোনেশিয়া, ইরান, নাইজেরিয়া ও তুরস্ক।
ইপিবি থেকে জানা যায়, ইন্দোনেশিয়ায় চলতি অর্থবছরে রফতানি হয়েছে ২ কোটি ৭২ লাখ ৮২ হাজার ডলারের পণ্য। যা আগে ছিলো ৩ কোটি ৯২ লাখ ৯৫ হাজার ডলার। ইরানে রফতানি গত অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে যেখানে ছিলো ৪ কোটি ৫৪ লাখ ৮৭ হাজার ডলারের, বর্তমান অর্থবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৬৯ হাজার ডলারে।
একই ভাবে কমেছে নাইজেরিয়া ও তুরস্কে রফতানি। নাইজেরিয়া ও তুরস্কে রফতানি কমে চলতি বছরে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৬ লাখ ডলার ও ৪৪ কোটি ৫৬ লাখ ৬৯ হাজার ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৫