শেরপুর (বগুড়া): ক্রমাগতভাবে মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। প্রয়োজনের তাগিদে প্রতিদিন নতুন বসতবাড়ি নির্মাণ করছে মানুষ।
এছাড়া দিনেদিনে বাড়ছে খাদ্য চাহিদাও। এই বাড়তি চাহিদা মেটাতে বছরের বারো মাসই জমিতে রকমারি সবজি চাষকে লাভজনক মনে করছেন চাষিরা।
কৃষকরা বলছেন, সবজি চাষে নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিনই তা বাজারে বিক্রি করে নগদ টাকা পাওয়া যায়। এতে বেশি ফলনের পাশাপাশি ব্যয়ও অপেক্ষাকৃত কম। তা দিয়ে বেশ ভালোভাবেই চলে যাচ্ছে সংসার। যা ধান চাষে হয় না।
এ ধরনের বিভিন্ন সংকটের কারণে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সবজি পল্লিখ্যাত গাড়িদহ ইউনিয়নের কৃষকরা সবজি চাষকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
চকপাথালিয়া গ্রামের সবজি চাষি মো. শামছুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তুলনামূলকভাবে সবজি চাষে লাভ বেশি হওয়ায় গ্রামের অধিকাংশ কৃষক এখন সবজি চাষে নজর বাড়িয়েছে।
স্থানীয়রা ধারণা করছেন, অনেক আগে থেকেই চকপাথালিয়া গ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে সবজি চাষ করছেন কৃষকরা। জমির মাটি পলিযুক্ত হওয়ায় বংশ পরম্পরায় সবজি চাষ বাড়তে থাকে এই অঞ্চলে।
মো. শামছুর রহমান ও মো. নূরুল ইসলাম নামে দুই চাষি বাংলানিউজকে জানান, বাপ-দাদার আমল থেকেই এখানে সবজি চাষ করে আসছেন। তবে ঠিক কখন থেকে এ এলাকায় সবজি চাষ শুরু হয় তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি তারা।
‘গাড়িদহ ইউনিয়নের প্রায় ২০-২৫টি গ্রামের কৃষকের প্রধান আবাদযোগ্য ফসল নানা জাতের সবজি,’ যোগ করেন তারা।
এই দুই কৃষক জানান, ফুলবাড়ি, চকপাথালিয়া, কালসিমাটি, গাড়িদহ, রামেশ্বরপুর, শিবপুর, দড়িপাড়া, বাংড়া, বোংগা, চন্ডিযান, দামুয়া, রানীনগর, জয়নগর, মহিপুর, রামনগর, কানুপুর গ্রামেই সব‘চে বেশি সবজি চাষ হয়।
বেশি লাভজনক হওয়ায় ধান চাষের চেয়ে সবজি চাষ করছেন বলে জানান শামছুর রহমান ও নূরুল ইসলাম।
তবে শামছুর রহমান এও বলেন, ধান চাষ যে একেবারে কমে গেছে তা ঠিক নয়। অনেকেই অবশ্য পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী সামান্য জমিতে ধান চাষ করেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরে একবিঘা জমি থেকে সর্বোচ্চ ৩৫-৪০ মণ হারে ধানের ফলন পাওয়া যায়। এর জন্য ব্যয়ও করতে হয় প্রচুর। যা একজন প্রান্তিক চাষির পক্ষে অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। তাই সহজ ও কম খরচে সবজি চাষ করেন।
কৃষকদের খেতে আলু, শিম, বেগুন, পটল, বাঁধাকপি, ফুলকপি, টমেটো, মূলা, করলা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, আদা, রসুন, হলুদ, কেশোর, কলা, লালশাক, পালং শাক, পুঁইশাক, পেঁপেসহ নানা ধরনের সবজি ফলছে।
আর এসব সবজি বিক্রি করেই তারা বেশ লাভবান হচ্ছেন। আর স্বাচ্ছন্দে সংসার চালাচ্ছেন।
একজনের দেখাদেখি উপজেলার অন্যান্য গ্রামের কৃষকরাও বেশি লাভের আশায় সবজি চাষে উৎসাহ দেখাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৫