ঢাকা, শনিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ভ্যাট নিবন্ধন নেই মুদ্রণ শিল্পের ৬ হাজার প্রতিষ্ঠানের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৫
ভ্যাট নিবন্ধন নেই মুদ্রণ শিল্পের ৬ হাজার প্রতিষ্ঠানের ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: দেশে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ভারি সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মুদ্রণ শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এরমধ্যে ভ্যাট সনদপত্র রয়েছে মাত্র দেড় শতাধিক প্রতিষ্ঠানের।



নিবন্ধন না থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাট জমা দিলেও তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি নেতারা।

বুধবার (০১ এপ্রিল) জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্মেলন কক্ষে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় তারা এ অভিযোগ করেন।

সংগঠনের চেয়ারম্যান শহীদ সেরনীয়াবাত বলেন, দেড় হাজার প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন রয়েছে, নিয়মিত ভ্যাট দেয়।

বাকি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন না থাকলেও তারা প্রতিষ্ঠান ভেদে এক থেকে দেড় হাজার টাকা করে ভ্যাট দেয়। কিন্ত‍ু তা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না হয়ে ভ্যাট কর্মকর্তাদের পেটে চলে যায়।

তিনি বলেন, নিবন্ধনহীন প্রতিটি প্রতিষ্ঠান গড়ে এক থেকে দেড় হাজার টাকা ভ্যাট দেয়। মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে ২৫ শতাংশের বেশি লাভ হয় না। সেক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দেওয়ার ভয়ে অনেকে নিবন্ধন করছে না। মোট বিক্রির ওপর ভ্যাট আরোপ করা হলে সাত হাজার ভ্যাট নিবন্ধন করবে ও ভ্যাট দেবে বলে ‍জানান তিনি।

সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তোফায়েল খান বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত বছর ৩৩ কোটি বই দিয়েছে। এরমধ্যে তিন কোটি বই বিদেশি কোম্পানি মুদ্রণ করে এনেছে।

বাকি বই দেশীয় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান ছাপিয়েছে। শুল্ক বৈষম্য, অসম প্রতিযোগিতা আর বিশেষ একটি মহলের কারণে তিন কোটি বই ছাপানোর কাজ পেয়েছে।

এর বাইরে প্রতিবছর দেশে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক নিবন্ধনসহ প্রায় দেড়শ কোটি বই ছাপার কাজ করে দেশীয় মুদ্রণ শিল্প।

তিনি অভিযোগ করেন, কাজের অভাবে দেশের মুদ্রণ শিল্পে হতাশা বিরাজ করলেও গত বছর ভারত থেকে তিন কোটি প্রাথমিক পাঠ্যবই ছাপানো হয়েছে।

দেশে মানসম্মত কাগজ উৎপাদন হলেও বাংলাদেশের শিশুদের জন্য ছাপানো ওই তিন কোটি বইয়ে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ভারতীয় কাগজ।

তোফায়েল খান বলেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠান বই আমদানির করে আর ১২ শতাংশ শুল্ক দেয় এনসিটিবি। ফলে দেশের হাজার কোটি টাকা তারা নিয়ে যায়।

দেশীয় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান বই আমদানিতে ৬১ শতাংশ কর দিলেও বিদেশি প্রতিষ্ঠান তা দেয় না। অথচ বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে তাদের দেশ উল্টো ইনসেনটিভ দেয়। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের ওপর ২৫ শতাংশ করারোপ করলে দেশি প্রতিষ্ঠান টিকবে।

সেরনীয়াবাত আরো বলেন, সরকারি পাঠ্য বইয়ের ক্ষেত্রে দেশীয় কাগজ তৈরি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা ভালো কাগজ না দিয়ে নিউজপ্রিন্ট দিচ্ছেন। পাঠ্য বইয়ে ভালো কাগজ দেওয়ার স্বার্থে ভালো মানের কাগজ আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করারও দাবি জানান তিনি।

এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক মঞ্জুর আহমেদ বলেন, দেশীয় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান ভালো বই দেবে, সেক্ষেত্রে করও বেশি দেবে তা কিভাবে হয়। বিদেশি প্রতিষ্ঠান কর না দিয়ে শত শত কোটি টাকা নিয়ে যাবে। বিকাশমান এ শিল্পকে বাঁচাতে টেন্ডার, আমদানি ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার দাবি জানান তিনি।

আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, মুদ্রণ শিল্পে ভ্যাট নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। সেক্ষেত্রে কোনো গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখব।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।