ঢাকা: ব্যবসায়ী হতে উৎসাহ জাগানিয়া পাঠ আমাদের পাঠ্যসূচিতে কমই থাকে। এফবিসিসিআই সেই ভূমিকাটি নেবে।
সোমবার (৬ এপ্রিল’২০১৫) বিকেলে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপচারিতায় গুলশানের নিজ কার্যালয়ে প্রিয় সংগঠনকে নিয়ে এমনটাই বলছিলেন তরুণ ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) আসন্ন নির্বাচনে পরিচালক পদে প্রার্থী হচ্ছেন সফল এ ব্যবসায়ী।
সংগঠনের সাবেক সভাপতি মো. আকরাম হোসেনের (১৯৯০-৯২) ছোট ছেলে আমজাদ। নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ শেষ করে সাউথ-ইস্ট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। পরে হাল ধরেন পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জনতা ট্রাভেলস লিমিটেডের।
বিভিন্ন প্রশিক্ষণের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি মনে করছেন- উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ব্যবসায়ীদের কাজ ও যোগ্যতা বাড়ায়। আর ঋণ পাওয়া যদি সহজ হয়, তাদের পরবর্তী কাজও অনেক সহজ হয়ে যায়।
নির্বাচিত হলে কী করবেন এমন প্রশ্নে আমজাদ হোসেন বলেন, ‘উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে চাই। যারা ব্যবসায় আসতে আগ্রহী, তারা অনেক সময় বিনিয়োগের সামর্থ্য না থাকায় সেটি পারেন না। তাই ব্যাংক লোন পেতে এফবিসিসিআই যেন আরও সহযোগী হতে পারে, সে লক্ষ্যে কাজ করবো আমি। ’
নির্বাচনের প্রাথমিক ফিল্ড-ওয়ার্কে কেমন সাড়া পাচ্ছেন এমন প্রশ্নে তিনি জবাব দেন এভাবেই ‘প্রবীণ ব্যবসায়ীরা তাদের অভিজ্ঞতা জানাচ্ছেন। তরুণ ব্যবসায়ীরা তাদের চাওয়ার বিষয়টি জানাচ্ছেন। এতে আমাদের সুবিধা হবে। সবার পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে এ সংগঠনকে আরও উপযোগী করতে পারবো। ’
তিনি আরও বলেন, এখন সদস্য হিসেবে যে ভূমিকা রাখতে পারছি, পরিচালক হলে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবো। প্রিয় সংগঠনকে তরুণ ও উদ্যোক্তা বান্ধব করার চিন্তা থেকেই নির্বাচনে আগ্রহী হয়েছি।
আরও অনেক উদ্যোক্তা সৃষ্টির সুযোগটি নিতে চান আমজাদ। দেশের সার্বিক স্বার্থে এর খুবই প্রয়োজন রয়েছে বলে মত তার।
আমজাদ বলেন, ‘বর্তমানে সংগঠনটিকে নিয়ে যদি কারও কোন অসন্তুষ্টি বা অভিযোগ থাকে, সেসব কাটিয়ে উঠতে ভূমিকা রাখতে চাই। এটি সবদিক থেকে অত্যন্ত সফল সংগঠন যেন হয়- সেটাই আমার চাওয়া। এফবিসিসিআই সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য যেন আগ্রহীরা সহজে পেতে পারেন, সেই উদ্যোগও নেবো। ’
‘২৩ মে’র আগে বিভিন্ন প্রোগ্রামে ভোটারদের মতামত নেব। জানতে চাইবো- কেমন সংগঠন তারা চান। সে আলোকে ঠিক হবে আমার পরিকল্পনা’।
এ ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, বর্তমানে সংগঠনে ১ হাজার৭৬৩ জন সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে নতুন ভোটার ৯’শ জন। নতুনরা এফবিসিসিআই’র ইতিবাচক পরিবর্তন চান। তারা নতুন নেতৃত্ব চান। তারা আমাকে উৎসাহিত করেছেন।
বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অস্থিরতা তৈরি হলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বড় ক্ষতিতে পড়ে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আমজাদ বলেন, ব্যবসায়ীরা কোন দলের নন। দলের পরিচয়ের চেয়েও তাদের বড় পরিচয় তারা ‘ব্যবসায়ী’। তাই সব রাজনীতিবিদদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, দেশের জন্য ক্ষতিকর কোনো কর্মসূচি যেন কোনো পক্ষই না নেন।
‘কারণ উদ্যোক্তাদের ক্ষতি মানেই সংশ্লিষ্ট অনেক মানুষের ক্ষতি ও দেশের অর্থনীতি এতে দুর্বল হয়ে পড়ে’- বলেন তিনি।
নারী উদ্যোক্তাদের বিষয়ে খুবই আশাবাদী আমজাদ। তিনি বলেন, উইমেন চেম্বার ও এফবিসিসিআিই নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে ভালো কাজ করছে। তা অব্যাহত রেখে আরও বেশি সহযোগিতার সুযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করবো আমরা। নারীদের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা মানে দেশের শক্তি অনেক বাড়িয়ে দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে এফবিসিসিআই’র ভালো সম্পর্ক রয়েছে। সেটিও অব্যাহত রেখে বিদেশে বিনিয়োগে আগ্রহীদের সহযোগিতা বাড়াবো। এছাড়া বাইরের বিভিন্ন ফান্ডের সহযোগিতা যেন বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা পান, সেই লক্ষ্যে কাজ করবে এফবিসিসিআই। এতে দেশের ওপর চাপ কমবে। সমৃদ্ধ হবে অর্থনীতিও।
তিনি বলেন, দেশের অন্যান্য চেম্বার, প্রায় ৩৫৫টি অ্যাসোসিয়েশন, ১৮টি জয়েন্ট চেম্বারের সঙ্গে সহযোগিতামূলক কাজ করবো আমরা। এটি নিঃসন্দেহে সবাইকে উপকৃত করবে।
শেষ দিকে তিনি বলেন, এফবিসিসিআই ব্যবসায়ীদের প্রিয় একটি সংগঠন। যেমন আমার কাছেও। এর কার্যকারিতা আরও বাড়াতে যা যা চাইবেন সদস্যরা, সেসব পূরণে কাজ করতে চাই, সেটিই হবে আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
এফবিসিসিআইয়ের ২০১৫-১৭ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন হবে আগামী ২৩ মে। ওই দিন পরিচালক পদে ভোট হবে। নির্বাচিত পরিচালকরা এরপর সভাপতি, প্রথম সহসভাপতি ও সহ-সভাপতি নির্বাচন করবেন। ঘোষিত তফসিল মোতাবেক চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ৯ এপ্রিল। পরিচালক পদে প্রার্থিতা দাখিলের শেষ সময় ১৯ এপ্রিল।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৫
এসকেএস/এনএস/