ঢাকা: অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে রাষ্ট্রায়ত্ব রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ের(ঢাকা) শাখা ব্যবস্থাপক ও মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এসএম আতিকুর রহমান এখন কাজ করছেন বেসরকারিখাতের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেডে। একজন দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তার পরবর্তীতে একই পেশায় কাজের সুযোগ না থাকলেও আতিকুর রহমানের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে ব্যাংক পাড়ায়।
সূত্র মতে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ দুর্নীতির অভিযোগে আতিকুর রহমানকে চাকরি থেকে অপসারণ করে। বর্তমানে তিনি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজার হিসেবে ঢাকার মতিঝিল শাখায় কর্মরত রয়েছেন।
অর্থ মন্ত্রনালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বিধান মতে, রাষ্ট্রায়ত্ব কোনো ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপককে(জিএম) দণ্ডিত করা হলে সে দেশে কার্যরত কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবে না। কিন্তু এসএম আতিকুর রহমান তার অপসারণের খবর গোপন রেখে এনআরবি গ্লোবালে চাকরি করছেন।
জানতে চাইলে এসএম আতিকুর রহমান নিজে অপসারিত হওয়ার কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, আমাকে বেআইনিভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করেছি। বর্তমানে সেটি বিচারাধীন রয়েছে। রায় না হওয়ায় আমি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকে যোগদান করেছি।
এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রনালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ২০১৪ সালের ২৬ আগস্ট সচিব ড. এম আসলাম আলম স্বাক্ষরিত অপসারণের চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থমন্ত্রীর সচিব, উপ সচিব ও ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অধিশাখায় পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এসএম আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ১৯৮৫ এর ৩(বি) ও (ডি) তে বর্ণিত অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় একই বিধিমালার ৯(৩) সি মোতাবেক তাকে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে চাকরি হতে অপসারণ করার গুরু দণ্ড প্রদান করা হলো।
এর আগে তার বিরুদ্ধে আনা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকবার নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তাই তাকে এ শাস্তি প্রদান করা হলো। রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এসএম আতিকুর রহমান রূপালী ব্যাংকের স্থানীয় শাখার (ঢাকা) ম্যানেজার থাকাকালীন সময়ে ৬টি বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানকে অনাদায়ী জানার পরও বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ দিয়েছে। নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে এসব প্রতিষ্ঠানকে বিদেশ থেকে মালপত্র আমদানির জন্য এলসি খোলায় সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও আতিকুর রহমান দায়িত্ব পালনের সময়কালে অর্ধ কোটি টাকা খরচ করেছেন। এসব খরচের কোনো বিল ভাউচারও দেখাতে পারেননি।
এ বিষয়ে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে বলেন, একজন অভিজ্ঞ ব্যাংকার হিসেবে এসএম আতিকুর রহমানকে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পেলে কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় তাকে অব্যাহতি দিতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৫
এসই/এনএস