সৈয়দপুর (নীলফামারী): মিটার, গজ কিংবা পিস হিসেবে নয়, নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিভিন্ন ধরনের কাপড় বিক্রি হচ্ছে রীতিমতো দাঁড়িপাল্লায় বাটখাড়া দিয়ে ওজন করে।
দিনে দিনে উপজেলার সাধারণ মানুষের কাছে এসব কাপড়ের দোকান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওজন পদ্ধতিতে কাপড় বিক্রির খবর ছড়িয়ে পড়ায় দিনে দিনে বাড়ছে এর চাহিদা। ক্রেতারা সাশ্রয়ী মূল্যে এসব দোকান থেকে কাপড় কিনতে পারায় দিন দিন বাড়ছে এ ব্যবসার পরিধিও।
এছাড়া খুচরা বিক্রির পাশাপাশি এ মোকামে পাইকারি দরেও কাপড় বিক্রি করা হয়। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা এ মোকাম থেকে কাপড় সংগ্রহ করছেন।
এ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকার বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানার উদ্বৃত্ত্ব বা বাতিলকৃত কাপড় লট বা টন হিসেবে কিনে আনেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। এরপর তা থেকে বাছাই করে ভালো কাপড়গুলো বিক্রির জন্য রাখা হয়।
এসব কাপড়ের পাশাপাশি নতুন সব ধরনের কাপড়ও কিনে আনেন ব্যবসায়ীরা। এসব কাপড় নিয়েই গড়ে তোলা হয়েছে ওজনে কাপড় বিক্রির মোকাম।
তারা জানান, সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় পাইকাররা শুরুর দিকে ওজনে কাপড় কিনতে আগ্রহী ছিলেন না। তবে দিন দিন তাদের আগ্রহ বাড়ছে। আস্তে আস্তে এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
বর্তমানে ছোটবড় সব বয়সের মানুষের পোশাক তৈরিসহ বাড়িঘরের নানা কাজে ব্যবহারের উদ্দেশে এসব দোকানে থেকে কাপড় কিনছেন অনেকে। এসব দোকানে নানা ডিজাইন ও রঙের প্রিন্ট, স্ট্রাইপ, চেক, একরঙা ভয়েল, লোন টেট্রন, সুতি, জর্জেট, লিনেনসহ সব ধরনের কাপড় পাচ্ছেন ক্রেতারা।
মোকামে আসা একাধিক ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসব কাপড় বিছানার চাদর, শার্ট, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, পায়জামা, বালিশ ও কুশনের কভার, দরজা-জানালার পর্দা, টেবিল ক্লথ তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হচ্ছে।
সৈয়দপুরে মোকাম ঘুরে দেখা যায়, দাঁড়িপাল্লার পাশাপাশি বর্তমানে বেশিরভাগ দোকানে ডিজিটাল স্কেলও ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে ক্রেতারা ডিজিটাল স্কেলেই কেনাকাটায় বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
তারা জানান, এখানে প্রতিকেজি কাপড় রকমভেদে ৩০ টাকা থেকে ৬শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।
উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের গৃহবধূ সালমা, পৌর এলাকার তরুণী আয়শা জানান, এখানে ওজনে কাপড় অনেকটা সস্তায় পাওয়া যায়। পাতলা কাপড় ওজনে কিনলে পরিমাণেও বেশি পাওয়া যায়। তাই গজ হিসেবে কেনার চেয়ে ওজনে কেনাটা বেশি সাশ্রয়ী।
এদিকে, এ এলাকার অনেক দর্জি বা অল্প পুঁজির লোকেরা নানারকম ডিজাইনের ছোটবড় নানা সাইজের পোশাক তৈরি করে খুচরা ও পাইকারি দরে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। রেলওয়ে বাজারসহ পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে এসব তৈরির প্রতিষ্ঠান।
রেলওয়ে বাজারে ওজনে বিক্রি করা গুলজার ক্লথ স্টোরের মালিক আল-আমিন, আসিফ ক্লথ স্টোরের মালিক আতিক আনিস, শামীম ক্লথ স্টোরের মালিকসহ কয়েকজন জানান, ঢাকা থেকে টনে কিনে কেজিতে বিক্রি করছি। প্রতিনিয়ত ক্রেতাদের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে নারী ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৫
এসআর