ঢাকা: অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ ছাড়া যখন তখন বেসরকারি ব্যাংককর্মীদের চাকরিচ্যুত করা যাবে না।
বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল’২০১৫) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংক(বিবি) সম্মেলন কক্ষে দেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী কর্মর্কতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভা শেষে ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের চাকরি হতে ইস্তফা, বরখাস্তকরণ/অপসারণ এবং পরবর্তী আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তি প্রসঙ্গে আলোচনা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিককালে ডাচ বাংলা, ব্র্যাক, মিউচুয়াল ট্রাস্টসহ কয়েকটি ব্যাংকের শত শত কর্মকর্তাকে গুরুতর কোনো অভিযোগ ছাড়াই লো পারফরমেন্সের অজুহাতে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিনা কারণে আমলযোগ্য নয় এমন অপরাধ ছাড়া যখন তখন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতি করা যাবে না। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকলে কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে তা হতে পারে।
এসকে সুর চৌধুরী ‘কর্মক্ষেত্রে কর্মীর পারফরম্যান্স ভালো নয় অভিযোগে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। একজন কর্মীর শিক্ষানবিশ কাল শেষ হওয়ার আগেই ৫বছরের অভিজ্ঞ কর্মকর্তার সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। পারফরম্যান্স ভালো করার জন্য প্রেসার কম দিতে হবে। আগ্রাসী লক্ষ্যমাত্রার ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। প্রয়োজনে বেশি বেশি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্যাংক সমুহের কর্মকর্তাদের পদত্যাগের পর ছাড়পত্র দেওয়ার বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকলেও তা পরিপালনে ব্যাংকসমুহ যথেষ্ট সহযোগিতামুলক মনোভাব প্রকাশ না করা এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। পরিশোধ করা হয়না গ্রাচুইটি ভাতা ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা। অবসর নেওয়ার পর বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে না পেনশনের টাকাও। চাকরি ছাড়ার পর আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।
কয়েকটি ব্যাংকে অফিস সময় শেস হওয়ার পর ৭-৮টা পর্যন্ত নারী সহকর্মীদের বসিয়ে রাখা হচ্ছে। নারী কর্মীদের নিরাপত্তা প্রদান ও যৌন হয়রানি বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাংকে অধিক সংখ্যক নারী কর্মী নিয়োগ করারও নিদের্শ দেওয়া হয়।
সাভারের ব্যাংক ডাকাতির পর ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল শাখা ও এটিএম বুথে অটো ডায়ালিং মেশিন স্থাপন করতে হবে। যাতে একটি সুইচ চাপলেই ব্যাংকের প্রধান কাযালয়, প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা, নিকটবর্তী থানা, র্যাব কার্যালয় এলার্ম বেজে উঠে।
মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২বছর সরকার নির্ধারণ করলেও অনেক ব্যাংক তা মানেনা। তাদেরকে নতুন করে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা আরও আধুনিক করা ও ঋণ হিসাব পুন: তফসিল না করে আদায়ের উপর জোর দিতে হবে। এজন্য ঋণের সুদ ২শতাংশ কমানো হয়েছে। ডেবিট কার্ডের সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আবাসন খাতের সমস্যা সমাধানে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি করতে নতুন পদ্ধতি বের করতে হবে।
সভার শুরুতেই সাভারে কর্মাস ডাকাতি, নেপালে ভূমিকম্প নিহতের জন্য ও গভর্নরের শ্বাশুড়ির মুত্যুর ঘটনায় তিনটি শোক প্রস্তাব উথাপন করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এন্টারপ্রাইজ ডাটা ওয়্যার হাউজে সঠিক তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
সভায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর চেয়ারম্যান আলী রেজা ইফতেখারসহ তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা(এমডি) উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫/আপডেটেড- ০১৩৭ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৫
এসই/এমএ/এনএস/