বগুড়া: পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বগুড়ার ১২টি উপজেলায় এবার ৭২টি কোরবানির পশুর হাট বসছে। এর মধ্যে ১৭টি স্থায়ী এবং ৫৫টি অস্থায়ী হাটে কোরবানির পশু কেনাবেচা হবে।
এসব হাট ঘিরে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যাপারীদের নিরাপত্তা দিতে গোয়েন্দা ও সাদা পোশাকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ কাজ করবে। পাশাপাশি হাটগুলোতে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট উপজেলার প্রশাসনের পক্ষ থেকে জালনোট শনাক্তকরণের মেশিন থাকবে।
এদিকে কোরবানির হাটগুলোতে জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে ৪৬টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কাজ করবে। এই টিমের সদস্যরা হাটে আসা কোরবানির পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন। অসুস্থ বা ক্ষতিকারক ওষুধ খাওয়ানো পশু শনাক্ত করে তাদেরকে আইনের হাতে তুলে দেওয়া হবে এই মেডিকেল টিমের কাজ।
বুধবার (১৬সেপ্টেম্বর) প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হলে এসব তথ্য ওঠে আসে।
জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলা সদরের ঘোড়াধাপ, গাবতলী উপজেলার নারুয়ামালা, ডাকুমারা, সারিয়াকান্দির জোড়গাছা, ফুলবাড়ী, সোনাতলার পাকুল্লা, কলেজহাট, শিবগঞ্জের মহাস্থান, বুড়িগঞ্জ, কাহালুর জামগ্রাম, দুপচাঁচিয়ার ধাপেরহাট, আদমদীঘির সান্তাহার, আদমদীঘি, শেরপুরের বারোদুয়ারী, নন্দীগ্রামের ওমরপুর, ধুনটের গোসাইবাড়ী ও শাজাহানপুরের সুলতানগঞ্জে স্থায়ীভাবে পশুর হাট বসে।
এছাড়া কোরবানি উপলক্ষে অস্থায়ীভাবে সদরের কালিতলা, সাবগ্রাম, পল্লীমঙ্গল, চাঁদমোয়া, গাবতলী উপজেলার কদমতলী, কাগইল, পীরগাছা, দূর্গাহাট, পেরীরহাট, তরণীহাট, বাগবাড়ী, সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া, বোহাইল, রামচন্দ্রপুর, সোনাতলার বালুয়া, সোনাতলা, তেকানী, হরিপুর, শিবগঞ্জের মোকামতলা, শিবগঞ্জ, পিরব, কিচক, দাড়িদহ, কাহালুর মাদরাসামাট, দেওগ্রাম, দূর্গাপুর, মালঞ্চা, বিবিরপুকুর, দুপচাঁচিয়ার চৌমনী, তালোড়া, তালুস, জিয়ানগর, আদমদীঘির কুন্দগ্রাম, নশরৎপুর, চাঁপাপুর, শেরপুরের ছোনকা, জামাইল, বেলঘরিয়া, রানীরহাট, ভবানীপুর, নন্দীগ্রামের রনবাগা, কড়িরহাট, কুন্দালহাট, ধুনটের ধুনট, মথুরাপুর, হাসুখালী এবং শাজাহানুপরের নয়মাইল, রাণীরহাট, টেঙামাগুর, ওমরদীঘি, মাদলা, দুবলাগাড়ী, গোহাইল ও জামাদারপুকুর হাট বসবে।
জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. খন্দকার মো. বজলুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, জেলার এসব উপজেলায় মোট ৪৬টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম একযোগে কাজ করবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৫টি, গাবতলীতে ২টি, সারিয়াকান্দিতে ৫টি, সোনাতলায় ৬টি, শিবগঞ্জে ৫টি, কাহালুতে ৩টি, দুপচাঁচিয়ায় ২টি, আদমদীঘিতে ৩টি, শেরপুরে ৫টি, নন্দীগ্রামে ৩টি ধুনটে ৪টি ও শাজাহানপুরে ৩টি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম কোরবানির পশুর হাটে অবস্থান করবে।
এই কর্মকর্তা জানান, এসব মেডিকেল টিমের সদস্যরা রোগাক্রান্ত পশু চিহ্নিত করবেন। পাশাপাশি ক্ষতিকারক ওষুধে মোটাতাজাকরণ পশু চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) আরিফুর রহমান মন্ডল বাংলানিউজকে জানান, কোরবানির পশুর হাটগুলোতে যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে সে জন্য ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি পশুর হাটে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া গোয়েন্দা ও সাদা পোশাকধারী পুলিশের সার্বক্ষণিক টহল থাকবে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রত্যেক হাটে জালনোট শনাক্তকরণে গোয়েন্দা (ডিবি ও ডিএসবি) পুলিশের কাছে মেশিন থাকবে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রতিটি উপজেলায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে স্থানীয়ভাবে একই ধরনের মেশিন সরবরাহ করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৫
এমবিএইচ/আরআই