ঢাকা: দেশের সব ব্যাংকের চেয়ে সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগে মুনাফার পরিমাণ বেশি। প্রচারণার অভাবে দেশের মানুষ এর সুফল নিতে পারছেন না, বলেছেন জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক আইজ উদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী ‘আয়কর মেলা-২০১৫ শুরু হয়।
সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রথমবারের মতো আয়কর মেলায় যোগ হয়েছে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর।
সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বিষয়ে মেলায় আসা করদাতা ও সেবাগ্রহীদের কাছ থেকে বেশ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলানিউজকে জানান আইজ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, জাতীয় সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার প্রায় ১১ শতাংশ, যেখানে সব ব্যাংকেই এ হার ৭ শতাংশ। এছাড়া সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ অত্যন্ত নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত।
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা বিষয়ে জানতে আসা স্কুল শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ জেনে বিনিয়োগ করতাম না। এখানে এসে সব সেবা সম্পর্কে জানতে পেরে আশ্বস্ত হলাম। সঞ্চয়পত্র সম্পর্কে আরও বেশি সচেতনতা তৈরি করা দরকার।
পরিবার সঞ্চয়পত্র (৫ বছর মেয়াদী) সম্পর্কে সেলিনা নামে এক নারী বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংকে টাকা রাখলে অতিরিক্ত কর কেটে নেয়। মুনাফার হারও কম। কিন্তু সঞ্চয়পত্রে লাভ বেশি। এতদিন সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ সম্পর্কে জানতাম না। কিভাবে বিনিয়োগ করতে হয়, তা মেলার বুথ থেকে জানলাম।
মেলার বুথে থাকা জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের সহকারী পরিচালক রাজিয়া বেগম জানান, পরিবার সঞ্চয়পত্রে (৫ বছর মেয়াদী) ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ মুনাফা রয়েছে।
এছাড়া পেনশন সঞ্চয়পত্রে (৫ বছর মেয়াদী) ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ, ৫ বছর মেয়াদী বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে (৩ বছর মেয়াদী) ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ, ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড (৫ বছর মেয়াদী) ১২ শতাংশ, ইউএস ডলার প্রিমিয়ার বন্ড (৩ বছর মেয়াদী) সাড়ে ৭ শতাংশ, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড (৩ বছর মেয়াদী) সাড়ে ৬ শতাংশ, ডাকঘর সঞ্চয়পত্র সাধারণ সাড়ে ৭ শতাংশ এবং ৩ বছর মেয়াদীতে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ মুনাফা দেওয়া হয়।
সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে উৎসে কর ছাড়া আর কোনো কর দিতে হয় না বলে এতে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে বলে জানান তিনি।
রাজিয়া বেগম বলেন, গত দু’দিনে মেলায় আসা করদাতা ও সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বিষয়ে খুবই আগ্রহ দেখতে পেয়েছি। মেলায় বিনিয়োগ ফরম ও বিনিয়োগের নিয়মাবলী সংবলিত লিফলেট দেওয়া হচ্ছে। প্রথমবারের মতো মেলায় খুবই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
মহাপরিচালক আইজ উদ্দিন আহমেদ জানান, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, নারী, অক্ষমসহ সবাই এখানে বিনিয়োগে আস্থা পাচ্ছেন। প্রায় আড়াই কোটি বিনিয়োগকারী সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছেন। প্রতি মাসে দেড় হাজার নতুন বিনিয়োগকারী যুক্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫
আরইউ/আরএম