রংপুর থেকে: রবি শস্য নিয়ে টানা বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন রংপুর অঞ্চলের চাষিরা। গত পাঁচদিন টানা বৃষ্টির কারণে শাক-সবজির মতো রবি শস্য ও রোপা আমনের ক্ষতি ছাড়াও ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, জেলার মিঠাপুকুর, কাউনিয়া, পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলা এলাকায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক। বিশেষ করে ক্ষতি হয়েছে রোপা আমন খেত ও রবি শস্যের।
রংপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে রোপা আমন ও রবি শস্য নিয়ে আরও ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।
বুধবারও (২৩ সেপ্টেম্বর) থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে রংপুরে। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে দু’এক দিনের মধ্যে থেমে যাবে বৃষ্টি।
সদর উপজেলার সদ্যপুষ্করণি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার চাষিরা জানান, এই মৌসুমের ফসল পটল, কচু, ঝিঙা, শসা, মরিচসহ শাক-সবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পানি জমে থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গাছ।
উপজেলার পালিচড়া গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে তাদের পটল খেতের ক্ষতি হচ্ছে। মরিচের গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে।
মিঠাপুকুর শানেরহাট এলাকার স্থানীয় একটি নদীতে বাঁধ দেওয়ার কারণে দ্রুত পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় উপজেলার নিচু এলাকায় পানি জমে আছে। এতে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিত ইটভাটায় চাষের জমির মাটি ব্যবহারে নিচু হয়ে যাওয়ায় পানি জমে থাকছে। সদর উপজেলার ধাপেরহাট এলাকার কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, টানা বৃষ্টির কারণে তাদের শসার খেত প্রায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবার এক লাখ ৬২ হাজার ৩৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করা হয়েছিলো। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এ পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে তিন হাজার ৮২ হেক্টর জমির ফসল। আর ছয় হাজার ২৬২ হেক্টর জমিতে আবারও রোপন করা হয়েছে রোপার চারা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মকবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, টানা বৃষ্টিতে রোপা আমন ও নিচু জমিতে বিভিন্ন রবি শস্যের ক্ষতি হচ্ছে। রবি শস্য লাগানো হয়েছে এক হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে।
বিএডিসির রোপা আমনের নিজস্ব চারা ও পাবনা, ঝিনাইদহ, যশোর থেকেও চারা এনে ক্ষতিগ্রস্ত খেতে রোপন করা হয়েছে বলে জানান মকবুল হোসেন। এছাড়া কেই কেউ ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে ‘বলান’ (রোপনের উপযোগী চারা) রোপন করেছেন।
জমে থাকা পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিলে রবি ফসল ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তা মকবুল হোসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
এমআইএইচ/এএ