ঢাকা: মিলছে সব বয়সী ও আকারের পশু। দামও অনেকটা হাতের নাগালে।
হাটে অনেকেই এসেছেন পরিবারের সঙ্গে পছন্দের পশুটি কিনতে। বাড়ির ছোট শিশুরাও এসেছে বাবা, নানার হাত ধরে। সব মিলিয়ে ঈদের আগাম উৎসবের ছবিতে পরিণত হয়েছে পশুর হাট।
বুধবার সরেজমিন রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে পূর্বাচলমুখী ৩০০ ফুট সড়কের পাশে পুলিশ হাউজিংয়ের খালি জায়গায় কোরবানির পশুর হাটে পাওয়া গেল এ চিত্র।
দিনের শুরুর ভাগে এ হাটে শুধু কোরবানির পশু ও বিক্রেতাদের উপস্থিতিই বেশি ছিল। কিন্তু দুপুর হতেই চিত্রটি পাল্টে যায়। ক্রেতাদের সমাগমে জমে উঠতে থাকে এ পশুর হাটটি।
বেলা আড়াইটার দিকে ৯১ হাজার টাকা দিয়ে লাল রঙের গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলেন আবদুস সোবহান। তিনি জানান, প্রতিবছরই কোরবানির গরু তিনি নিজে কেনেন। অনেক সময়ে দেখা যায়, পশু পছন্দ হলেও টাকায় হয় না। আবার টাকায় হলে মনের মতো পশু পাওয়া যায় না। কিন্তু এবার সবকিছুই মনের মতো হয়েছে।
কথাগুলো বলতে বলতেই কয়েকজনের সঙ্গে নিজেও গরুকে তাড়া দিলেন আবদুস সোবহান। জানালেন গরু কিনে তিনি খুশি।
সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে দল বেঁধে গরু বিক্রি করতে এসেছিলেন আবুল কাশেম, রাজ্জাকসহ আরো কয়েকজন। মোট ১৮টি গরু নিয়ে এসেছিলেন তারা। এর মধ্যে বিক্রি বাকি আছে তিনটি গরু।
আব্দুল রাজ্জাক জানান, আমরা সবাই মনের মতো দামই পেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে।
এ বছর ১৫ লাখ টাকা দিয়ে গরু বিক্রি করেছেন রাজবাড়ী এলাকার খামারি শিমুল। এখনো তার বেশ কয়েকটি গরু বিক্রি বাকি আছে।
শিমুল জানান, সারা বছরের পরিশ্রমের ফল পাওয়া যায় এ সময়েই। তাই, সব সময়ই চিন্তিত থাকতে হয়। তবে ভালো দাম পেলে বেশ ভালো লাগে। যে কয়েকটি বিক্রি করেছি তাতে মনে হচ্ছে, বাজার ভালোই যাচ্ছে। ক্রেতা ও বিক্রেতারা উভয়ই খুশি।
হাটে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকার, আকৃতি, রঙ ও জাতের ওপর ভিত্তি করে পশুর দরদাম চলছে।
বিক্রেতাদের আশা, সন্ধ্যার দিকে ক্রেতাদের আরো বেশি সমাগম হবে। ক্রেতারা মনে করছেন, যত আগে পশু কেনা যায়, ততই ভালো।
বিশাল এ হাটে সব ধরনের কোরবানির পশু পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই আবার দেশের বাড়ি থেকে মানুষ নিয়ে এসেছেন পশুর দামদর ঠিক করে দেওয়ার জন্য।
গুলশান থেকে আব্দুর রহমান তার দুই ছেলে ও নাতিকে নিয়ে এসেছেন গরু কিনতে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে হাঁটার পর নাতি রাইয়ানের আবদার ঘাড়ে নেওয়ার। নানাও ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
আবার হাটের পূবদিকে গিয়ে দেখা যায়, সন্তানরা বাবার কাছে আবদার করছে, ওই গরুটি ভালো; বাবা ওটা কিনে নাও।
পশুর হাটের এ রকম খণ্ড খণ্ড চিত্র সত্যিই ঈদের আমেজকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। শিশুদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তারা পশু জবাই করার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যত্ম করার পাশাপাশি সবসময়ই পাশে থাকে। তাদের আগ্রহটাই বেশি থাকে পশুকে ঘিরে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫
একে/এবি