ঢাকা: কৃষিজমি রক্ষা করে টেকসই স্থাপনা গড়ে তুলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
সোমবার (০৫ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ব বসতি দিবস -২০১৫ উপলক্ষে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ সময় ছয়দিনব্যাপী গৃহায়ন ও নির্মাণ প্রযুক্তি প্রদর্শনীর উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
তথ্য মন্ত্রী বলেন, এমন স্থাপনা নির্মাণ করতে হবে যেন তাতে দেশের মাটি কম ক্ষয় হয় এবং কৃষি জমি রক্ষা হয়। তবেই সবুজ টেকসই নগর গড়ে তোলা যাবে।
তিনি বলেন, পরিকল্পিত নগরায়ন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। দুর্যোগ সহিঞ্চু ঘরবাড়ি আমরা তৈরি করতে পারছি না। ফলে নিরাপত্তাসহ নানা ঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে আমাদের।
৭০ দশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুললেও পরবর্তীতে বাংলাদেশের কেউ এ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব বোঝেনি বলেও দাবি করেন হাসানুল হক ইনু।
এ সময় তিনি নগরায়নে শিল্পায়ন, দুর্যোগ সহিষ্ণু স্থাপনা তৈরি, পরিবেশ, কৃষিজমি রক্ষাসহ নানা চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন।
সুকান্ত ভট্টচার্যের কবিতার অংশ বিশেষ ‘সব জঞ্জাল পিঠে করে চলে যাবো’ উল্লেখ করে সবাইকে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে নগর গড়ে তোলার আহ্বান জানান ইনু।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম বজলুল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোহম্মদ আবু সাদেক, পিইঞ্জ।
কৃষি জমি রক্ষার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, কৃষি জমি সংরক্ষণ ও রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রধান প্রতিবন্ধকতা হলো অপরিকল্পিত গ্রামীণ গৃহায়ন এবং অবৈজ্ঞানিক ভাবে মাটি পুড়িয়ে ইটের উৎপাদন। নিয়ম না মানার কারণেই এর প্রবণতা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী জি এম জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া বলেন, ঢাকা মহানগরে যে পরিমাণ খোলা ও খেলাধুলার মাঠ রয়েছে তা পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া জলাবদ্ধতার কারণেও অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
পাবলিক প্লেসগুলো দখলে চলে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া স্থানগুলো উদ্ধারের তাগিদ দেন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ চেয়ারম্যান খন্দকার আখতারুজ্জামান বলেন, সনাতন পদ্ধতি অবলম্বন করে যারা বাড়ি ঘর গড়ে তুলছেন তাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আধুনিক স্থাপনা গড়ে তোলার পদ্ধতি ব্যবহারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
এ সময় তিনি কৃষি জমির মাটি ব্যবহার করে ইট তৈরি বন্ধ করে বিকল্প ব্যবস্থা খোঁজার অনুরোধ জানান।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, এনএসসি মহাসচিব ও সেক্রেটারি সৈয়দ এইচ লোটন।
এবার দিবসটি উদযাপন হচ্ছে ‘সার্বজনীন স্থান সবার অধিকার’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে। ছয়দিনব্যাপী এ প্রদশর্নী আগামী ১০ অক্টোবর শেষ হবে। এতে দেশের বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। দর্শনার্থীরা প্রদর্শনী থেকে নির্মাণ স্থাপনা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা পাঁচটা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় ছিলেন রিসার্চ ইঞ্জিনিয়ার আহমাদুল হাসান ও হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর টু পিএ মেহেরুন নেসা।
সবশেষে মন্ত্রী ও অতিথিরা প্রদর্শনীর বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৫
একে/আরআই