ঢাকা: এক সময়ের সোনালী আঁশ নামে খ্যাত পাটের দুর্দিন যেন কাটছেই না। গত তিন বছরে পাটের রফতানি কমেছে প্রায় ৭শ’৬১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১১-১২ অর্থবছরে পাট ও পাট জাতদ্রব্যের রফতানি আয় ছিলো ৯শ’ ৬৭ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন ডলার যা ২০১৪-১৫ অর্থ বছর শেষে কমে দাঁড়িয়েছে ৮শ’৬৮ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ডলারে। সে হিসাবে তিন বছরে রফতানি কমেছে ৯৮ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার, টাকায় যার মূল্যমান প্রায় ৭৬১ কোটি টাকা।
রফতানি কমে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে পাট শিল্পের প্রতি প্রশাসনের নজর না দেয়াকেই দায়ী করছেন ডেমরার লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের কর্মকর্তারা। লতিফ বাওয়ানি জুট মিলের এক কর্মকর্তা বলেন, সময় এগিয়ে যাচ্ছে। সব কিছুই ডিজিটালাইজড হচ্ছে। জুট মিলগুলো কিন্তু এখনো আগের মতোই চলছে। স্বাধীনতার পর তেমন কোনো উন্নয়নই হয়নি জুট মিলগুলোর। বরং আদমজীসহ অনেক ছোট-বড়. সরকারি-বেসরকারি জুট মিল বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়েছে লক্ষাধিক শ্রমিক। গত ৪০ বছরেও পাটকলগুলোর জন্য তেমন কোনো যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়নি। তাহলে এ শিল্পের দুরাবস্থা থাকাটাই স্বাভাবিক নয় কী? প্রশ্ন তোলেন জুট মিলটির কর্মকর্তারা।
তবে এসব বিষয়ে সরাসরি মুখ খুলতে নারাজ প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের পরিচালক (অর্থ) মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের গণমাধ্যমের সাথে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলায় মানা আছে। এসব বিষয়ে কেবল মাত্র চেয়ারম্যান সাহেবই কথা বলতে পারবেন।
পরে একাধিকবার বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল হুমায়ূন খালেদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
এদিকে বর্তমানে কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ থাকায়ও পাটের রফতানি কিছুটা কমে আসছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়র ব্যুরোর সূত্র।
সূত্রটি জানায়, বাংলাদেশে কাঁচা পাটের কদর দেশের বাইরেও রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে কাঁচা পাটের রফতানি বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বরং তার জায়গায় পাটজাত দ্রব্য রফতানি করার প্রতি আগ্রহী হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয় পাট ব্যবসায়ীদের।
এসব বিষয়ে ইপিবি’র সহসভাপতি শুভাষিস বসু বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশ থেকে বর্তমানে কাঁচা পাট রফতানি বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ পর্যন্ত কাঁচা পাট রফতানি শুরু করা হবে বা আদৌ শুরু করা হবে কি না সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা আসেনি। পাটজাত দ্রব্য রফতানিতে উৎসাহিত করতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমাদের পণ্য যাতে বিশ্ব দরবারে ব্রান্ড হতে পারে সেই চেষ্টাই চলছে। পাটের নতুন বাজার অনুসন্ধান চলছে। আশা করছি অতি সত্বর পাটের রফতানি আরো বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৫
ইউএম/আরআই