ঢাকা: দেশে কার্যরত সমবায় সমিতিগুলোকে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনেদেনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার (১২ অক্টোবর) বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান-সম্পাদকের কাছে পাঠিয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন, ধ্বংসাত্মক অস্ত্র বিস্তারে অর্থায়ন সংক্রান্ত লেনদেন প্রতিরোধ ও সনাক্ত করার লক্ষে ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদনক্রমে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ক ঝুঁকি মুক্ত রাখা, এ বিষয়ে বিদ্যমান আইন, বিধিমালা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ইউনিটের বিগত সময়ে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন ও নির্দেশনা পরিপালনে সমিতি নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রধান কার্যালয়ে একটি ‘কেন্দ্রীয় পরিপালন ইউনিট’ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ওই ইউনিটকে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের দায় দায়িত্ব সম্পর্কিত নির্দেশনা জারি ও সময়মতো পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা যথাযথভাবে পরিপালন করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, নীতিমালা অনুযায়ী জাতিসংঘ বা বাংলাদেশ সরকার নিষিদ্ধ ঘোষিত কোনো ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামে অথবা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন-স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি বা সত্ত্বার নামে আমানত-ঋণ রয়েছে কিনা বা কোনো লেনদেন সংঘটিত হয়েছে কিনা তা চিহ্নিত করতে সমবায় সমিতিগুলোর নিয়মিত লেনদেন মনিটর ও লেনদেন পর্যালোচনা করতে হবে।
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থ যোগান প্রতিরোধ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের উদ্দেশে প্রতিটি প্রাথমিক ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ের সমবায় সমিতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে কন্ট্রাক্ট পয়েন্ট হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করবে।
প্রাথমিক, কেন্দ্রীয় ও জাতীয় সব পর্যায়ের সমবায় সমিতির ক্ষেত্রে মনোনীত কর্মকর্তার নাম, পদবী, যোগাযোগের ঠিকানা, টেলিফোন নম্বর, ফ্যাক্স ও ই-মেইল বিএফআইইউতে সরবরাহ করতে হবে।
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধে এবং সমবায় খাতকে এ বিষয়ক ঝুঁকি থেকে মুক্ত রাখার জন্য তাদের গ্রাহক ও সদস্য পরিচিতির সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
প্রতিটি সমিতির সব কর্মকর্তাকে দৈনন্দিন লেনদেন বা কার্যক্রমে সন্দেহজনক লেনদেন সনাক্তকরণে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। সমিতির কোনো কর্মকর্তা কর্তৃক সন্দেহজনক লেনদেন বা কার্যক্রম চিহ্নিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় দলিলাদিসহ কন্ট্রাক্ট পয়েন্টের কাছে পাঠাতে হবে।
তবে, জাতীয় পর্যায়ের সমবায় সমিতিগুলোর ক্ষেত্রে কন্ট্রাক্ট পয়েন্ট অবিলম্বে প্রয়োজনীয় দলিলাদিসহ চিহ্নিত সন্দেহজনক লেনদেন বা কার্যক্রম কেন্দ্রীয় পরিপালন ইউনিট বরাবর পাঠাবে।
কেন্দ্রীয় পরিপালন ইউনিট থেকে তা নির্দিষ্ট ফর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউতে পাঠাবে। সমবায় সমিতিগুলোকে সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্টের তথ্যাদি বিএফআইইউ কর্তৃক পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে।
সন্দেহজনক লেনদেন বা কার্যক্রম সনাক্তকরণ বা রিপোর্ট করার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টির গোপনীয়তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৫
এসই/পিসি