ঢাকা: ব্যাংক খাতের মোট পরিচালন ব্যয়ের শূণ্য দশমিক ৪০ শতাংশ ব্যয় হয় প্রশিক্ষণের পেছনে। অর্থাৎ ব্যাংকের পরিচালনার পেছনে ১০০ টাকা ব্যয় হলে তার ৪০ পয়সা ব্যয় হয় প্রশিক্ষণের পেছনে।
২০১৪ সালে ব্যাংক খাতে মোট পরিচালন ব্যয় ছিলো ১৬ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা ও প্রশিক্ষণের পেছনে ব্যয় হয় ৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
দেশের ব্যাংক খাতে বর্তমানে ১ লাখ ৭২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে ৮৮ দশমিক ০৪ শতাংশ পুরুষ ও ১১ দশমিক ৯৬ শতাংশ নারী।
২০১৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর ৩২টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মোট প্রশিক্ষকের সংখ্যা ৮২। যা প্রয়োজনের তুলানায় যথেষ্ট নয়।
বৃহষ্পতিবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর মিরপুরস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টে (বিআবিএম) আয়োজিত ব্যাংকের সক্ষমতা উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় প্রশিক্ষণের কার্যকারিতা- শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণা জরিপ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সেমিনারে ব্যাংক কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রশিক্ষণ কতটুকু কাজে লাগছে তার ওপর একটি জরিপধর্মী গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন বিআইবিএম-এর এ কে গঙ্গোপাধ্যায় চেয়ার অধ্যাপক এস এ চৌধুরী।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. আবুল কাসেম। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে একটি কথা আছে, প্রশিক্ষণ রক্ত বাঁচায়। ব্যাংকারদের জন্যও এই কথাটি প্রযোজ্য। তবে এক্ষেত্রে রক্ত নয় ঝুঁকি থেকে বাঁচায়।
বিআইবিএমএ-এর মোজাফফর আহমেদ চেয়ার অধ্যাপক ও কৃষি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, প্রশিক্ষণের পেছনে আরো বেশি ব্যয় করতে হবে। টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। ট্রেইনিং ইনস্টিটিউট কোনো ভলান্টারি অরগানাইজেশন নয়। এখানে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। তবেই মানসম্মত প্রশিক্ষণ আশা করা যাবে।
মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, ব্যাংকের ঊধ্বর্তন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ যদি চায় তবেই কেবল মানবসম্পদ বিভাগের পক্ষে সঠিক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, তাছাড়া প্রশিক্ষকের মধ্যে মানসম্মত প্রশিক্ষণ দেওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মধ্যে বিশেষ এক ধরনের (সফট স্কিল) দক্ষতা থাকতে হবে যা দেখে জুনিয়র কর্মকর্তারা তাদের অনুসরণ করতে আগ্রহী হবে।
বাংলাদেশ লোক প্রসাশন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষক এ জেড এম শফিকুল আলম বলেন, প্রশিক্ষণের ফলাফল তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায় না। তাছাড়া প্রশিক্ষণ থেকে কতটুকু লাভবান হওয়া গেল তাও হিসাব করা কঠিন।
উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, যখনই কোনো প্রশিক্ষণের ডাক পড়ে ব্যাংক দেখে কে সবচেয়ে কম কাজ করে। কেননা যারা বেশি কাজ করে তাদের পাঠালে ব্যাংকের কাজের ক্ষতি হবে। তিনি এর থেকে বেরিয়ে এসে প্রশিক্ষণের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল রয়েছে এমন কর্মকর্তাকে নির্বাচন করতে ব্যাংকগুলোকে আহ্বান জানান।
প্রশ্নোত্তর পর্বে আরো অংশ নেন সোনালী ব্যাংকের স্টাফ কলেজের পরিচালক গোলাম সাকলাইন, এনসিসি ব্যাংকের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রিন্সিপাল জগদিশ দেবনাথ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০৬ ঘণ্টা. অক্টোবর: ১৫, ২০১৫
এসই/এসআই