মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: দেশের কৃষক সমাজকে প্রয়োজনীয় মূলধন যোগান দিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল)। এরই ধারাবাহিকতায় ন্যাশনাল ব্যাংক চালু করেছে ‘এনবিএল কৃষি ঋণ’ প্রকল্প।
পাশাপাশি সমাজের মানুষের উন্নয়নে বিভিন্ন সহযোগিতা কর্মসূচি সম্পাদন করছে ব্যাংকটি।
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চলমান অ্যাগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো’তে ন্যাশনাল ব্যাংকের স্টল সূত্র জানায় এ তথ্য। বিআইসিসি’র মূল ফটক পার হয়ে বাম পাশে প্রবেশ করলেই ব্যাংকটির স্টল পাওয়া যাবে।
ন্যাশনাল ব্যাংক’র সিনিয়র অ্যাসিসট্যান্স ভাইস প্রেসিডেন্ট (অ্যাগ্রিকালচারাল ক্রেডিট ডিভিশান) মো. হাবিব উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে অর্থের যোগানের মাধ্যমে কৃষকদের বিভিন্ন সেবা দিচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক। আমাদের দেশের অর্থনীতিতে কৃষকদের অবদান অনেক বেশি, তাই তাদের নিয়ে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করছি আমরা।
তিনি জানান, গ্রাহকের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকের পক্ষ থেকে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়। এছাড়া সামাজিক সহায়তাও দেওয়া হয় ব্যাংকটির মাধ্যমে। এরই ধারাবাহিকতায় ছিটমহলেও কার্যক্রম শুরু করবে ব্যাংকটি।
এসব সমাজসেবা কার্যক্রমের কারণে দিনদিন গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ব্যাংকের স্টল সূত্র জানায়, বিশেষ বিশেষ ফসলেও রয়েছে ব্যাংকটি স্বল্প সুদে ঋণের কার্যক্রম। এছাড়া উত্তরবঙ্গ কৃষি এলাকা হিসেবে পরিচিত পাওয়ায় ওইসব এলাকায় বিশেষ প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে।
মেলায় ব্যাংকটির স্টলে এ বিষয়ে নানা তথ্য দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
যেসব খাতে এনবিএল কৃষি ঋণ: ফসল শস্য উৎপাদন, সেচ যন্ত্রপাতি ক্রয়, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার ও অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়, হালের গরু/মহিষ ক্রয় ও পালন, মৎস্য ও চিংড়ি চাষ, হাঁস ও মুরগির খামার, দগ্ধ খামার, গরু মোটাতাজাকরণ, ছাগল ও ভেড়ার খামার, লবণ চাষ, মাশরুম চাষ, নার্সারি, উদ্যান ভিত্তিক ফসল উৎপাদন, শস্য গুদামজাত ও বাজারজাতকরণ, অন্যান্য কৃষি ও কৃষি সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড, বীজ উৎপাদন, সোলার ও বায়োগ্যাসসহ বাংলাদেশের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় উল্লেখিত খাতগুলো এ ঋণের আওতাভুক্ত হবে।
ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা: ২১ থেকে ৬০ বছর বয়সী উদ্যোগী, কর্মঠ, আন্তরিক, সৎ ও নিষ্ঠাবান কৃষক হতে হবে। একক ও গ্রুপভাবে ঋণ দেওয়া হবে। এনবিএল ঋণ চলতি ও মেয়াদি ভিত্তিতে পাওয়া যায়। কৃষক ও ছিটমহলবাসী মাত্র ১০ টাকায় হিসাব খুলতে পারবেন।
প্রচলিত সুদের হার শতকরা ১১ ভাগ। আর রেয়াতি সুদের হার শতকরা চার ভাগ (ডাল, তেল, মসলা ও ভুট্টা চাষের জন্য)। সোলার ও বায়োগ্যাসে শতকরা নয় ভাগে ঋণ পাওয়া যাবে (শর্ত প্রযোজ্য)।
তবে কৃষি ঋণ ছাড়াও ন্যাশনাল ব্যাংক অন্যান্য খাতেও সহজ শর্তে আর্থিক সহযোগিতা করে আসছে বলে জানান ব্যাংকটির কর্মকর্তারা।
এদিকে এ অ্যাগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো ২০১৫’র সঙ্গে চলছে প্রক্রিয়াজতাকরণ খাদ্য নিয়ে ‘ফুড প্রো ২০১৫’ এবং চাল উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজতকরণের যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী নিয়ে ‘রাইস অ্যান্ড গ্রেইনটেক এক্সপো ২০১৫’।
মেলার আয়োজনে রয়েছে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা), ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশ ইন্সপায়ারড প্রকল্প এবং এক্সট্রিম এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট সল্যুশন (ইথ্রি সল্যুশন)।
এবারের মেলায় বাংলাদেশসহ ভারত, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, চীন, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, জাপান, হল্যান্ড, তুরস্ক, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এতে ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের ২৩০টি স্টল রয়েছে।
মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত। সকাল ১০টা থেকে রাত সাতটা পর্যন্ত মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন দর্শানার্থীরা। বিস্তারিত জানা যাবে www.foodpro.com.bd থেকে। আগামী শনিবার (১৭ অক্টোবর) শেষ হবে এ মেলা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০১৫
একে/জেডএস