ঢাকা: নয় বছর ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিনমাস পর পর সঞ্চয়পত্রের মুনাফা তোলেন চাঁদপুরের শামসুল আলম। প্রত্যেক বার আসা যাওয়ায় প্রায় এক হাজার টাকা খরচ ও পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়।
‘এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকে দুই থেকে তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা নিতে হয়। টাকা পেতে বিকেলে হলে ওইদিন ঢাকায় রাত কাটিয়ে পরের দিন বাড়ি ফিরি। এখন থেকে টাকা ব্যাংক হিসাবে জমা হওয়ায় আমার ভোগান্তি দূর হলো। ’
স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকের হিসাবে সঞ্চয়পত্রের অর্থ জমার ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ‘অটোমেশন অব সঞ্চয়পত্র পে-আউট’ কার্যক্রম উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানান সঞ্চয়পত্রভোগী শামসুল আলম।
শুধু শামসুল আলম একা নন। ৩৩ হাজার ৩৬০ কোটি ১৯ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র গ্রাহকের ভোগান্তিরন কথা ভেবেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহকের হিসাবে সঞ্চয়পত্রের অর্থ জমার ইলেকট্রনিক পদ্ধতি ‘অটোমেশন অব সঞ্চয়পত্র পে-আউট’ কার্যক্রম চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে গর্ভনর ড. আতিউর রহমান এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এসময় গর্ভনর বলেন, সঞ্চয়পত্রের টাকার জন্য আর বই জমা দিয়ে টোকেন নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। মাস শেষে মুনাফার টাকা ও মেয়াদ শেষে আসল টাকা সরাসরি জমা হবে নিজের হিসাবে।
টাকা জমা হওয়ার সঙ্গে গ্রাহকের মোবাইলে শর্ট মেসেজ ও ইমেইল করে জানিয়ে দেওয়া হবে টাকা জমার নিশ্চিত বার্তা।
তিনি বলেন, গ্রাহক সেবার মান বাড়ানোর অংশ হিসেবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সঞ্চয়পত্রের সব ধরনের পরিশোধ সরাসারি গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হলো। সেখান থেকে গ্রাহক তার সুবিধা মতো টাকা তুলতে করতে পারবেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহসান উল্লাহর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- ডেপুটি গর্ভনর আবুল কাশেম, আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান, নাজনীন সুলতানা, জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের মহাপরিচালক মাহমুদা আক্তার মীনা প্রমুখ।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-অগাস্ট) ৪ হাজার ৬২৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল মোট ২৮ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৫।
এসই/এসএস