ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাংলানিউজকে এমডি

কৃষি-গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকায় ‘এনবিএল’

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
কৃষি-গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকায় ‘এনবিএল’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে বিভিন্ন যুগান্তকারী কার্যক্রম শেষে, দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল)। এ লক্ষ্যে নতুন তিন শাখার মধ্যে দু’টিই গ্রামে খোলার নীতি নিয়েছে ব্যাংকটি।


 
এছাড়া সহজ শর্তে ঋণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে অগ্রণী অবদান রাখছে দেশের প্রথম এ বেসরকারি ব্যাংক।
 
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. বদিউল আলম বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘এগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো’-তে ব্যাংকটির স্টলে কথা হয় তার সঙ্গে।
 
একান্ত আলাপকালে কৃষি ও কৃষকের জীবন উন্নয়ন, গ্রামীণ অর্থনীতি, নারীর ক্ষমতায়ন ও জাগরণ, মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ-সুবিধাসহ ব্যাংকের এগিয়ে যাওয়ার গল্প শোনালেন দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকিং সেবায় নিয়োজিত এ ব্যাংকার।  
 
আলাপের শুরুতেই বদিউল আলম বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তাদের মধ্য বড় একটি অংশ ছিলেন কৃষক। সেসময় কৃষকের অবদান অনেক বেশি ছিলো। এ বিষয়টি সামনে রেখে শুরু থেকেই কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে ব্যাংকটি নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
 
নারীর ক্ষমতায়ন ও জাগরণে ন্যাশনাল ব্যাংকের বিভিন্ন কার্যক্রম উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেলাই মেশিনসহ নানা উপকরণ দেওয়ার পাশাপাশি হস্তশিল্প, গাভী পালনের মতো কাজে স্বল্প সুদে আর্থিক সুবিধা দিচ্ছে ব্যাংকটি। এতে অনেক নারীরই জীবন বদলে গেছে।
 
বদিউল আলম বলেন, কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তিনটি ব্রাঞ্চ খুললে দু’টি ব্রাঞ্চই গ্রামে খোলা হচ্ছে। এতে একেবারে গ্রাম পর্যায়ে গ্রাহকদের সেবা নিশ্চিত করা যাবে। কেননা কৃষকের সিংহভাগই গ্রামে বাস করেন।
 
তিনি জানান, আদিবাসী, দিনমজুর, বর্গা, দরিদ্র চাষি, অবহেলিত ও নির্যাতিত মানুষের পাশে সব সময়ই ব্যাংকটি ছিলো এবং থাকতে চায়। এছাড়া শিল্প-সাহিত্যের পুর্নগঠনেও এনবিএল কাজ করে যাচ্ছে।
 
বদিউল বলেন, জাতি হিসেবে আমাদের অর্জন ও আনন্দ অনেক বেশি। আমরা এ আনন্দ সবার মধ্যে ভাগ করে নিতে চাই। দারিদ্র্যতা দূর করে জেলে, কুমার, কামার, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার, আদিবাসী, সাঁওতালসহ তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের ব্যাংকিং সেবা দিয়ে তাদের জীবনের মান উন্নত করতে চাই। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
 
১৯৮৩ সালে প্রথম বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে এনবিএল’র যাত্রার শুরু থেকেই ব্যাংকটি সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
 
এনবিএল’র সফলতার নেপথ্যে কী এমন রয়েছে, প্রশ্নের উত্তরে বদিউল আলম বলেন, গ্রাহকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করায় আস্থা ও প্রত্যাশার জায়গায় বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক। গ্রাহকের সেবার দিকটাই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। এর ফলেই ব্যাংকটি যুগের পর যুগ সফলতার আলোয় আলোকিত হচ্ছে।
 
ন্যাশনাল ব্যাংকের চেয়ারম্যানের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, উনি খুবই ভালো মানুষ। নিজের অর্থায়নে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলে চিকিৎসা সেবায় ভূমিকা রাখছেন। চেয়ারম্যান স্যারের নির্দেশেই কৃষি ও গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে ব্যাংকটি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। চায়ের দোকান, হতদরিদ্রসহ তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের সহযোগিতা করার জন্য সবসময়ই উৎসাহ দিয়ে থাকেন তিনি।
 
তিনি জানান, দেশের কৃষকদের প্রয়োজনীয় মূলধন যোগান দিতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে ব্যাংকটি। এরই ধারাবাহিকতায় ন্যাশনাল ব্যাংক ‘এনবিএল কৃষি ঋণ’ প্রকল্প চালু করেছে। এতে স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে কৃষকরা ঋণের সুবিধা পাচ্ছেন।
 
অভিজ্ঞ এ ব্যাংকারের সঙ্গে আলাপকালে ন্যাশনাল ব্যাংকের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্স ভাইস প্রেসিডেন্ট (এগ্রিকালচারাল ক্রেডিট ডিভিশন) মো. হাবিব উল্লাহসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
 
যেসব খাতে এনবিএল’র কৃষি ঋণ পাওয়া যাবে
ফসল শস্য উৎপাদন, সেচ যন্ত্রপাতি ক্রয়, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার ও অন্যান্য কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়, হালের গরু বা মহিষ ক্রয় ও পালন, মৎস্য ও চিংড়ি চাষ, হাঁস ও মুরগির খামার, দুগ্ধ খামার, গরু মোটাতাজাকরণ, ছাগল ও ভেড়ার খামার, লবণ চাষ, মাশরুম চাষ, নার্সারি, উদ্যানভিত্তিক ফসল উৎপাদন, শস্যগুদামজাত ও বাজারজাতকরণ, অন্য কৃষি ও কৃষি সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড, বীজ উৎপাদন, সোলার ও বায়োগ্যাসসহ বাংলাদেশের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় উল্লেখিত খাতসমূহ এ ঋণের আওতাভুক্ত হবে।
 
ঋণ প্রাপ্তির যোগ্যতা
২১ থেকে ৬০ বছর বয়সী উদ্যোগী, কর্মঠ, আন্তরিক, সৎ ও নিষ্ঠাবান কৃষক হতে হবে। একক ও গ্রুপ ভাবে ঋণ দেওয়া হবে। এনবিএল ঋণ চলতি ও মেয়াদী ভিত্তিতে পাওয়া যায়। কৃষক ও ছিটমহলবাসী মাত্র ১০ টাকায় হিসাব খুলতে পারবেন।
 
প্রচলিত সুদের হার শতকরা ১১ ভাগ। আর রেয়াতী সুদের হার শতকরা চার ভাগ (ডাল, তেল, মসলা ও ভুট্টা চাষের জন্য)। সোলার ও বায়োগ্যাসে শতকরা নয় ভাগে ঋণ পাওয়া যাবে (শর্ত প্রযোজ্য)।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৫
একে/এসএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।