ঢাকা: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা (প্রাইভেট) লিমিটেড মালিক ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর ঋণ খেলাপী হওয়ার বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়েছে অগ্রণী ব্যাংক।
বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হওয়ায় এ ধরনের বিভান্তিকর তথ্য দেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে ১৪ অক্টোবর অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল হামিদকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা (প্রাইভেট) লিমিটেড’র ১০ কোটি ৮৮ লাখ টাকার দুটি ঋণ হিসাব তফসীলিকরণ করে ডাটাবেজ হালনাগাদ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে চিঠি দেয় অগ্রণী ব্যাংক।
চিঠিতে বলা হয়, অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪২৭ তম সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতিমালা বিভাগের সূত্র নম্বর (পি-১) ৬৬১/১৩(সুদ মওকুফ)/২০১৫-১১৬৩১ নম্বর পত্রের বরাতে ৮ কোটি ৩৪ লাখ ৩৫ হাজার ৪শ’ ১ টাকা সুদ মওকুফ করে বাকি ১০ কোটি ৮৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা ১০ শতাংশ সুদে ১০ বছর মেয়াদে পরিশোধের জন্য অনুমোদন করা হয়েছে।
বর্ণিত ঋণ হিসাব দুটি তফসিলীকরণ হওয়ায় ৭ সেপ্টেম্বর ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোর অনলাইন ডাটাবেজ সংশোধন করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠায় অগ্রণী ব্যাংক। এতে অনাপত্তি দিয়ে অগ্রণীর এমডিকে পরের দিনই অবহিত করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সুদ মওকুফের বিষয়টি ১৩ সেপ্টেম্বর সোনার বাংলা প্রকৌশল সংস্থার চেয়ারম্যান কাদের সিদ্দিকীকেও জানায় অগ্রণী ব্যাংক।
এই চিঠি দেওয়ার ২০ দিন পর ২৭ সেপ্টেম্বর আইটিএমডি/সিআইবি/২৭১/১৫ পত্র দিয়ে ওই ঋণ হিসাব দু’টির পুনঃতফসিল বহাল রেখে আগস্ট ২০১৫ মাস ভিত্তিক অশ্রেণিকৃত (ইউসি) হিসাবে রিপোর্ট করা তথ্যে মন্দ ঋণ (বিএল) দেখানোর জন্য অনুরোধ করেছেন অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
ওই ঋণ হিসাব দু’টির ডিফল্ট স্ট্যাটাস বারবার পরিবর্তন করে সিআইবি ডাটাবেজে ভুল তথ্য অর্ন্তভুক্ত করায় সিআইবি সার্কুলার নম্বর ০২/২০১১ অনুচ্ছেদ ৪ অনুযায়ী কেন জরিমানা করা হবে না তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ আবদুল হামিদ বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দেওয়া হয়েছে। সোনার বাংলা প্রকৌশল সংস্থার ঋণ পুনঃতফসীলিকরণ করে ভুল করে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়েছিল। তাই পরে আবার চিঠি দিয়ে পুনঃতফসীল না করার অনুরোধ করা হয়েছে।
ঋণ খেলাপীর তথ্য পেয়ে ১৩ অক্টোবর ময়মনসিংহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার আলিমুজ্জামান টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম ও তার সহধর্মিণী নাসরিন কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন।
১৬ অক্টোবর শুক্রবার কাদের সিদ্দিকী আইনজীবীর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন। ২১ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনকে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
২৭ অক্টোবর মঙ্গলবার অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালত নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেন। একইসঙ্গে এ উপ-নির্বাচনে বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন আদালত। সোমবার (২ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৫
জেডএম/