পার্বতীপুর (দিনাজপুর): দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পাশের নবাবগঞ্জ উপজেলার দীঘিপাড়া কয়লাক্ষেত্র উন্নয়ন নিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষীমহল বড়পুকুরিয়া খনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন এ অপপ্রচার শুরু করেছে বলে খনি সূত্রে জানা গেছে।
বড়পুকুরিয়া খনি সূত্র জানায়, বড়পুকুরিয়ার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে অব্যাহত জ্বালানি চাহিদা মেটাতে নতুন করে
দীঘিপাড়া কয়লাক্ষেত্র উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া নেওয়া হয়। নতুন এ ক্ষেত্র থেকে বছরে ৪ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন করা সম্ভব হবে। যা দিয়ে ৪ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বড়পুকুরিয়া খনি কর্র্তৃপক্ষের দক্ষতা, সক্ষমতা ও কার্যকরী দক্ষ জনবল থাকার কারণে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষে সম্প্রতি দীঘিপাড়া কয়লাক্ষেত্র উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি বিভাগ দীঘিপাড়া কোল বেসিনের ২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকার মোট কয়লার পরিমাণ নির্ণয় এবং বেসিনের কেন্দ্রীয় অংশে (১০-১১ বর্গ কিমি) ভূ-গর্ভস্থ পদ্ধতি ব্যবহার করে বছরে ৪ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন খনি উন্নয়নের জন্য বড়পুকুরিয়া খনি কর্তৃপক্ষকে অনুসন্ধান ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের অনুমোদন দেয়।
এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া খনি কর্তৃপক্ষ ও জ্বালানি বিভাগের খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মধ্যে গত ২১ অক্টোবর একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরের পরপরই একটি স্বার্থান্বেষীমহল বড়পুকুরিয়া খনির উপব্যবস্থাপক মাসুদুর রহমান হাওলাদার থেকে শুরু করে মহাব্যবস্থাপক (কোম্পানি সচিব) আবুল কাসেম প্রধানিয়া, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) হাবিব উদ্দিন আহমদ, মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) আব্দুল মান্নান পাটওয়ারী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুজ্জামানসহ খনি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে।
খনি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, একটি মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে কয়লা উত্তোলনের ফলে অবনমিত ভূমি ও স্থাপনার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণকে পূনর্বাসন করা হয়নি।
এছাড়া আহত ও পঙ্গু শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ না দেওয়া, উচ্চমূল্য দেখিয়ে নিম্নমানের মালামাল ও যন্ত্রপাতি ক্রয় ও খনির মালামাল পাচার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও অপপ্রচার চালাচ্ছে মহলটি।
খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়লা উত্তোলনের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ জমি ও স্থাপনার উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি ক্ষতিপূরণ পেয়েও বাড়িঘর ছেড়ে যায়নি। পরে প্রশাসনও তাদের উচ্ছেদ করেনি। এছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগ মালামাল ক্রয় করে থাকে। ফলে এতে খনির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির সুযোগ নেই।
কর্তৃপক্ষের দাবি, স্বার্থান্বেষী ওই মহলটি সময়ে-অসময়ে খনি কম্পাউন্ডে প্রবেশ করতে না পেরেই এর নিরাপত্তা নিয়ে অপপ্রচার শুরু করেছে।
এসব বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কয়লা বিক্রির সময় একটি স্বার্থান্বেষী মহল ১ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন কয়লা ভুয়া কাগজ দেখিয়ে বরাদ্দ নিয়েছিল। কিন্তু তা আটকে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই চক্রটি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অপপ্রচারে নেমেছে।
তিনি বলেন, উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে কয়লা বিক্রি করা হয়। এতে অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ নেই। তা হলে গত অর্থবছরে কোটি কোটি টাকা মুনাফা হতো না।
তিনি জানান, নতুন কয়লাক্ষেত্রের জন্য কনসালটিং ফার্ম নিয়োগ করে পূর্ণাঙ্গ টেকনো ইকোনমিক ফিজিবিলিটি স্টাডি, আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগ এবং খনি নির্মাণ ও উন্নয়ন ইত্যাদি কাজ শেষে কয়লা উত্তোলন করতে ৮ বছর সময় লাগতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৫
এসআর