ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফলন ভালো, ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কা

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৫
ফলন ভালো, ন্যায্য দাম নিয়ে শঙ্কা ফাইল ফটো

ঢাকা: মাঠে এখন পাকা আমন ধানের সুবাতাস বইছে। ফলনও বেশ ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখেও লেগে আছে তৃপ্তির হাসি।

মাঠে প্রবেশ করলেই দেখা যাবে, রোপা আমন ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।

তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়ানো এই চাষিরা ধানের ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অনেক চাষির অভিযোগ, উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

ধান চাষিদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে উৎপাদনের খরচের সঙ্গে মিল রেখে ধানের নির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ করে দেয়া হোক।
 
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিইএ) সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে ৫৬ লাখ ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে এক কোটি ৩৫ লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে মাঠে ধান চাষ হয়েছে ৫৫ লাখ ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে। গত অর্থ বছরে (২০১৪-১৫) ৫৫ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে ১ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদন হয়।
 
আর কৃষি বিপণন অধিদফতর বলছে, চলতি মৌসুমে আমন ধান উৎপাদনে কেজি প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ১৮ টাকা। এ হিসাবে এক মণ ধানের (৪০ কেজি হিসেবে) দাম দাঁড়ায় সাত’শ ২০ টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজারে ধানের দাম মণ প্রতি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। তবে ধান একটু শুকনা হলে সাড়ে সাত’শ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারছেন কৃষকেরা। এছাড়া ধানের প্রকার ও মান ভেদে বিভিন্ন দামে বিক্রি হচ্ছে আমন ধান।

নাটোর জেলার ধানচাষি আবুল বরকাত জানান, উৎপাদন খরচের সঙ্গে বাজার মূল্যে মিলছে না তাদের। কিছুদিন পরে ধানের দাম আরও কমে যেতে পারে। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে যদি একটি নির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ করে দেয়া হতো তাহলে খুবই ভালো হতো।
 
চলতি আমন মৌসুমে উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে রংপুর এলাকায় অতিবৃষ্টির কারণে অনেক জমির ধান নষ্ট হয়ে যায়। তবে পরবর্তীতে ধান চাষিরা ঘুরে দাঁড়ান। ওই অঞ্চলেও বেশ ভালো ফলন হয়েছে বলে দাবি করলেন সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা।
 
ওই অঞ্চলের কাউনিয়া এলাকার ধান চাষি সরকার জাহিদুল ইসলাম জানান, ধানের জমিতে এখন গেলে মন ভরে যায়। কিন্তু বাজারে বিক্রি করার পরেই মনটা বিষন্ন হয়ে যায়। প্রতিবছরই এভাবেই আমন ধানের মৌসুম কাটাতে হয় তাদের। তবে এবার হয়তোবা একটু দাম পাওয়া যেতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করলেন তিনি।

উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় চাষিদের সঙ্গে কথা হলে এই প্রতিবেদককে তারা জানায়, কয়েক মাসের পরিশ্রম ফসল ঘরে তুলতে শুরু করেছেন তারা। এখন কৃষকরা যেন ন্যায্য দাম যেন সেদিকে সরকারের খেয়াল রাখা উচিত। নইলে আমন ধান চাষের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলবেন কৃষকেরা।

এদিকে বৃহস্পতিবার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় গত বছরের তুলনায় এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আমন ধানের চাল কম সংগ্রহ করা হবে। আর গত বছরের চেয়ে কেজি প্রতি এক টাকা কমে ৩১ টাকা দরে চাল কিনবে সরকার।

ডিইএ (সরেজমিন উইং) এর উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ আবদুহু বাংলানিউজকে বলেন, চলতি বছরে আমন ধান উৎপাদন কম হওয়ার যে শঙ্কা ছিল তা আর নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে কৃষকেরা এবারো ধানের ভালো ফলন পাবেন। অনেক এলাকায় দ্বিতীয়বার ধান চাষ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৫
একে/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।