ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলন বন্ধ

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৫
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলন বন্ধ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পার্বতীপুর (দিনাজপুর): মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায়  দিনাজপুরের পার্বতীপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।

খনি ভূ-গর্ভে উৎপাদনশীল ১২০৮ নম্বর কোল ফেইসে মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় রোববার (২২ নভেম্বর) সকাল থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়।



কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন নতুন করে ১২০৫ নম্বর ফেইস থেকে কয়লা উত্তোলন করা হবে। তবে ১২০৮ নম্বর ফেইসে ব্যবহৃত উৎপাদন যন্ত্রপাতি সরিয়ে ১২০৫ নম্বর ফেইসে স্থাপন করে পুনরায় উৎপাদনে যেতে অন্তত ২ মাস সময় লাগবে।

খনির ১২০৮ নম্বর কোল ফেইস থেকে কয়লা উৎপাদন শুরু হয় চলতি বছরের ২৫ মে। এ ফেইস থেকে কয়লা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার টন। সেখানে উৎপাদন করা হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ১০ হাজার টন কয়লা।

এদিকে, ১২০৮ নম্বর ফেইসে ব্যবহৃত উৎপাদন যন্ত্রপাতি সরিয়ে ১২০৫ নম্বর ফেইসে স্থাপনের কাজ শুরু করা হয়েছে। ১২০৫ নম্বর ফেইসটিতে উত্তোলনযোগ্য কয়লার পরিমান ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ মেট্রিক টন। তবে এ ফেইসটি ঝুঁকিপূর্ণ।

১২০৫ নম্বর কোল ফেইস থেকে এর আগে পরীক্ষমূলক  কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয় ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসের শেষে। উৎপাদন শুরুর কয়েকদিন পর ১০ মে ওই ফেইসে পানির প্রবাহ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়ে জলাধারের সৃষ্টি হয় এবং কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়।

খনির ভূ-গর্ভে কয়লা স্তরের উপরের অংশে কিছু কিছু জায়গায় বড় বড় পানির পকেট রয়েছে। কয়লা কাটতে গিয়ে পানির পকেট ভেঙে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। সে সময় খনি ভূ-গর্ভে স্থাপিত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ১৩টি পাম্প ২৪ ঘণ্টা চালু রেখে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ২ হাজার ঘনমিটার পানি সারফেজে সরিয়ে ফেলেও পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। পরবর্তীতে ১২০৫ নম্বর কোল ফেইসটি সাময়িকভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) মহাব্যবস্থাপক (মাইনিং) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, ১২০৫ নম্বর ফেইসে পানির প্রবাহ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার পর খনির উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকাদার সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের এক্সপার্টরা চীন থেকে এসে ফেইসটি পরিদর্শন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যাবতীয় তথ্য উপাত্ত নিয়ে গেছেন।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভিন্ন প্রক্রিয়ায় পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে  রেখে ওই ফেইস থেকে কয়লা উত্তোলন করতে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

বিসিএমসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমিনুজ্জামান জানান, খনির কয়লা উৎপাদন বন্ধের বিষয়টি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। একটি ফেইসের কয়লা উত্তোলন শেষ হলে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সরিয়ে নিয়ে নতুন ফেইসে স্থাপনের জন্য ৪০-৪৫ দিন সময় লাগে। এছাড়া এ সময়ে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ক্রটি-বিচ্যুতি ধরা পড়লে মেরামতের জন্য বাড়তি সময়ের প্রয়োজন হয়।

তিনি জানান, এজন্য কয়লার উৎপাদন সাময়িক বন্ধ থাকে। সব প্রস্তুতি শেষ করে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে ১২০৫ নম্বর ফেইস থেকে কয়লা উত্তোলন শুরু করা সম্ভব হবে।

তিনি আরো জানান, কয়লা উৎপাদন বন্ধ থাকায় পাশের বড়পুকুরিয়া ২৫০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রাখতে জ্বালানির সমস্যা হবে না। বর্তমানে খনির কোল ইয়ার্ডে প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা মজুদ রয়েছে। যা দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির ২টি ইউনিট ৪ মাস চালু রাখা যাবে। এছাড়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইয়ার্ডেও বিপুল পরিমাণ কয়লার মজুদ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৫
এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।