ঢাকা: আমে ফরমালিন মিশ্রণ থেকে রোজাদারের ইফতারির খেজুরে ফরমালিন মিশ্রণ, পচা-বাসি ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার বিক্রিসহ হেন অপকর্ম নেই আগোরা করেনি। বারবার জরিমানা হয়েছে, কিন্তু তাদের শিক্ষা কিংবা বোধদয় কোনটিই হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, বিশাল প্রচারণার আড়ালে তারা বিষযুক্ত খাবার, এমনকি ক্যান্সারের জীবানুবাহী ফরমালিন পুশ করছে গ্রাহকদের শরীরে। সবটাই শুধুমাত্র মুনাফার আশায়। বারবার শতর্ক করেও কোন লাভ হচ্ছে। যতবারেই অভিযানে গেছি একটা না একটা অনিয়ম ধরা পড়েছেই। এমনকি একই অনিয়ম বারাবার করছে আগোরা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মো: কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আগেও একাধিক দফায় সতর্ক করা হয়। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। শনিবার (১২ ডিসেম্বর) অভিযান পরিচালনার সময় পচা ও বাসি মাছ রাখার দায়ের আগোরার ধানমন্ডি শাখার তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এই জরিমানা করেন। অভিযানের নেতৃত্ব দেন মেয়র সাঈদ খোকন। ওই অভিযানে ডিএসসিসির দুই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুস সোয়েব ও মামুন অংশ নেন। দুপুরের দিকে পরিচালিত ওই অভিযান চালানো হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খান মো. নাজমুস সোয়েব বাংলানিউজকে বলেন, পচা মাছ ও মাংস রাখা এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ বিভিন্ন পণ্য রাখায় অপরাধে আগোরাকে নিরাপদ খাদ্য আইনে এই জরিমানা করা হয়েছে। এই আইনে ন্যূনতম জরিমানা তিন লাখ টাকা বলে তিনি জানিয়েছেন।
বেশি দামে পণ্য বিক্রি, মানহীন ও পচা মাছ রাখা, অনুমোদনহীন পণ্য বিক্রির দায়ে এর আগেও বেশ কয়েকবার জরিমানা করা হয়েছিলো আগোরার। ২১ জুলাই চট্টগ্রামে আগোরার একটি শাখায় অভিযানকালে আমে ক্যান্সারের জীবানুবাহী ফরমালিন আবিস্কার করেন ভ্রাম্যমান আদালত। তখন অনেক টাকা জরিমানা করা হয়। একই বছরের রমজান মাসে আগোরার শপে খেজুরে ফরমালিন আবিস্কার করেন ভ্রাম্যমান আদালত। এবারও জরিমানা ও মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পান।
কিন্তু এতো জরিমানার পরও কি তাদের বোধদয় হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসটিআই, ৠাব, ভোক্তা অধিদপ্তর সাফ জানিয়ে দিয়েছে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। জরিমানা দিচ্ছে, মুচলেকা দিচ্ছে কিন্তু বারবার একই অপরাধ করছে।
তারা জানিয়েছে, ২১ জুন বিকেলে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোডে এলাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের নেতৃত্বে এক ভেজাল বিরোধী অভিযানে প্রচুর পরিমাণে পচা মাছ ও মুরগির মাংস রাখার দায়ের জরিমানা করা হয়। কিন্তু ১২ ডিসেম্বর আবার যখন ওই একই শাখায় অভিযান পরিচালনা করা হয় তখনও নানান জাতের পঁচা-বাসি মাছ পাওয়া গেছে। তাহলে কিভাবে বলি তারা সংশোধন হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রামে মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশী পণ রাখার দায়ে জরিমানা করা হয়। একই অপরাধ পাওয়া গেছে তাদের জসিমউদ্দিন রোড শাখায় অভিযানে। ০৮ অক্টোবর বিএসটিআই‘র অভিযানে সেনসোডাইন টুথপেস্ট, জনসন সাবানম, ফা টয়লেট সোপ, হারমোনি অরেঞ্জ সাবান ও মেয়াদোত্তীর্ণ কেমি সাবান পাওয়া যায়। এবারও আগোরার জসিমউদ্দিন ব্রাঞ্চের তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য অনেকবার ফোন করলেও আগোরার কেউ রিসিভ করেন নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫১/১৭৪৭/১৮৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
এজেডএস/একেএ
** অনুমোদনহীন পণ্য বিক্রিতে আগোরাকে জরিমানা