ঢাকা: দেশের উত্তরাঞ্চলে হিমাগার নির্মাণে বিনিয়োগকারী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের খেলাপিঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধার সময়সীমা আরও ৩ মাস বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার (৪ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি উত্তরাঞ্চলে হিমাগার নির্মাণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের খেলাপিঋণ পরিশোধে বিশেষ সুবিধা দিতে আর্থিক ক্ষয়-ক্ষতির প্রমাণ ও প্রাসঙ্গিক কাগজসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করতে ২ মাসের সময় দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কৃষকদের বৃহত্তর স্বার্থে হিমাগার প্রকল্পগুলোর আর্থিক সঙ্কট বিবেচনায় ঋণ গ্রহীতাকে এ সুযোগ দিতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশও দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময় অনেক আগে অতিক্রান্ত হলেও এ ধরনের আবেদন আসা অব্যাহত থাকায় নতুন করে আবারও সময় বৃদ্ধির এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন প্রজ্ঞাপনে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত হিমাগার প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা এ সুবিধা পেতে ব্যাংকে আবেদন করতে পারবেন। এ সময়ের পর এ ধরনের আবেদন আর বিবেচনা করা হবে না।
এর আগে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিলো, খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ পুনঃতফসিল সুবিধা নেওয়া যাবে। একই সঙ্গে গ্রাহকের সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ পরিশোধের সময় বাড়াতে এবং সুদের হার কমাতে পারবে ব্যাংক।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, হিমাগার প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের অনিয়মিত ঋণ ব্লক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর, মরেটরিয়াম সুবিধা প্রদান ও নমনীয় পরিশোধ সূচি নিরূপণ করবে ব্যাংকগুলো। ব্লক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত ঋণে এক বছরের মরেটরিয়াম সুবিধা প্রদান এবং ষান্মাসিক কিস্তিতে ঋণ আদায়যোগ্য হবে। প্রকল্প ঋণের জন্য সর্বোচ্চ ৮ বছর ও চলতি মূলধনী ঋণের জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছর পরিশোধের সময়কাল হিসেবে বিবেচনা করা যাবে।
এ ঋণের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ অথবা কস্ট অব ফান্ড হার এ দুয়ের মধ্যে যেটি কম সে হারে সুদ আদায় করতে পারবে ব্যাংকগুলো। তাছাড়া এ ঋণের প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অনারোপিত সুদ, স্থগিত সুদ খাতে রক্ষিত সুদ ও দণ্ড সুদ মওকুফ (সম্পূর্ণ বা আংশিক) করতে পারবে ব্যাংক। তবে এক্ষেত্রে মূল ঋণ ও মামলা খরচ মওকুফ করা যাবে না।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছিলো, হিমাগার প্রকল্পগুলোর ঋণ পুনঃতফসিল ও নতুন ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রচলিত ডাউন পেমেন্ট শিথিল করার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ নির্ধারণ করবে। এক্ষেত্রে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি গ্রহণ করতে হবে।
নির্ধারিত সময়ে ঋণ আদায় না হলে ঋণ শ্রেণিকরণ ও প্রভিশনিংয়ের প্রচলিত নিয়ম প্রযোজ্য হবে এবং প্রচলিত নিয়মে ঋণ আদায় নিশ্চিত করতে হবে। তবে নতুন ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে জামানত ঘাটতি থাকলে গ্রাহকের কাছ থেকে নতুন জামানত গ্রহণ করতে হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৫
এসই/আরএম