বাণিজ্য মেলা থেকে: প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) পশ্চিম পাশে শুরু হয়েছে “ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৬”।
পহেলা জানুয়ারি শুক্রবার বিকেলে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মেলার উদ্বোধন করেন।
একে একে পাঁচটি দিন পার হলেও ৩১ দশমিক ৫৩ একর আয়তনের মাঠে লাল ইটের উপর বিছানো হয়েছে শুধুই বালি। ফলে সামান্য বাতাসেই দর্শনার্থীদের শ্বাস বন্ধ হওয়ার যোগাড় হয় মেলা প্রাঙ্গণে।
এমনকি দেশি-বিদেশি ৫৬টি ছোট-বড় স্টলও সব সময় বালিতে ভরে থাকে।
ব্লেজারের স্টল রাবেয়া ফ্যাশন ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ১৫ মিনিট পর স্টলটি ঝাড়ু দেওয়া হলেও বালি লেগেই থাকে সেখানে।
স্টলের সেলসম্যান আবুল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বালির কারণে ১৫ মিনিট পর ঝাড়ু দিতে হয়, না দিলে বালির স্তুর পড়ে যায়।
মেলা প্রাঙ্গণে প্রতিদিন সকালে মাত্র একবার পানি ছিটানো হয়, যা যথেষ্ট মনে করছেন না দর্শনার্থী এবং স্টল সংশ্লিষ্টরা।
নগরীর গ্রিন রোড থেকে আসা ফারিয়া স্মিতা বাংলানিউজকে বলেন, মেলা তো নয় যেন, কক্সবাজারের সি বিচের বালির মধ্যে হাঁটছি।
এখনও দেশি-বিদেশি অনেক স্টল প্রস্তত হয়নি। নির্মাণাধীন স্টলগুলো থেকে জানানো হয়, দেরিতে বরাদ্দ পাওয়ার কারণে স্টল তৈরি করতে দেরি হয়েছে। এখনও পাঁচদিন লাগবে স্টল প্রস্তুত করতে।
টয়লেটের প্রবেশ পথ সিগারেট বিক্রেতাদের দখলে: মেলার প্রতিটি প্রবেশ পথ ভ্রাম্যমাণ সিগারেট বিক্রেতাদের দখলে। নারী-পুরুষ সবার জন্য টয়লেটে প্রবেশের একটি মাত্র পথ। এতে করে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন নারীরা। কারণ সিগারেটের ধোঁয়া ও বালি ঠেলে নারীদের টয়লেটে প্রবেশ করতে হচ্ছে।
তিন ঘণ্টা পার্কিং খরচ ১০ টাকা: প্রতিটি মোটরসাইকেলের পার্কিংয়ের জন্য বেঁধে দেওয়া সময় তিন ঘণ্টায় ১০ টাকা। ৩ ঘণ্টার ১ মিনিট পরে এলেই দিতে হচ্ছে দ্বিগুন পার্কিং খরচ।
ইজারায় সর্বসাধারণের সড়কও: শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনের গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি জন সাধারণের জন্য। এই সড়ক ধরে নির্বাচন কমিশন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শিশু হাসপাতালে দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌঁছানো যায়। অথচ মেলা উপলক্ষে এই জনসাধারণের সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা থেকে ১০ টাকা ও প্রাইভেট কার থেকে ২০ টাকা আদায় করা হচ্ছে।
সোমবার (০৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ওই রাস্তা ধরে শফিকুল ফরাজী তার সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিয়ে মহাখালী থেকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ যেতে চাইলে তার কাছ থেকে ১০ টাকা দাবি করা হয়।
মেলায় প্রবশে না করে জনসাধারণের সড়ক ব্যবহার করে ১০ টাকা দিতে নারাজ সিএনজি চালন শফিকুল। এতে করে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সামনে তর্কে জড়িয়ে পড়েন শফিকুল ও মেলার ইজারাদাররা।
অন্যদিকে রশিদ না দিয়ে কেবল টোকেন ধরিয়ে দিয়ে চাঁদা আদায় করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অটোরিকশা এবং প্রাইভেট কার চালকরা।
চুন্নু ও রবিউল ইসলামসহ প্রায় ১০ জন চাঁদা আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন। বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে রবিউল বলেন, মেলার জন্য এক মাস রাস্তাও ইজারা নেওয়া হয়েছে। সিএনজি চালিত অটো রিকশার জন্য ১০ টাকা ও প্রাইভেট কারের জন্য ২০ টাকা পার্কিং খরচ নেওয়া হচ্ছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পযর্ন্ত রাস্তার ব্যবহার করলেই পার্কিং খরচ দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৬
এমআইএস/এটি