ঢাকা: সিটি ব্যাংকের অগ্রাধিকারভিত্তিক গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের (প্রায়োরিটি সেন্টার) সাজসজ্জায় অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করায় এর কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নির্দেশনা অমান্য করে নির্মাণ কাজ করায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রাহকদের সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে সেবা দিতে ২০১৫ সালের মাঝামাঝিতে রাজধানীর উত্তরা, বনানী ও ধানমন্ডি সিটি ব্যাংকের শাখায় আলাদাভাবে তিনটি প্রায়োরিটি সেন্টার নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়।
ইন্টেরিয়র ডিজাইনার প্রতিষ্ঠান ইন্টেরিয়র ফার্মকে দিয়ে সাজসজ্জার কাজ করাতে প্রতিটি প্রায়োরিটি সেন্টারে ব্যয় হচ্ছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক কোনো ব্যাংক পুরনো শাখা স্থানান্তর বা সাজসজ্জার জন্য সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্ধারিত পরিমানের তিনগুন বেশি অর্থ ব্যয় করছে সিটি ব্যাংক। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরে আসায় সম্প্রতি কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মাশরুর আরেফিন বাংলানিউজকে বলেন, সিটি ব্যাংকের ভিআইপি গ্রাহকদের জন্য নতুন সেবাকেন্দ্র (প্রায়োরিটি সেন্টার) করা হচ্ছে। এটি বিলাসবহুল হওয়ায় সাজসজ্জার খরচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত পরিমানের চেয়ে অনেক বেশি হচ্ছে। ব্যয় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পেলেই আবার কাজ শুরু করা হবে।
নতুন শাখা ও শাখা স্থানান্তরের সাজসজ্জায় ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করে ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নতুন শাখা স্থাপন, বিদ্যমান শাখায় ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন, অফিস ফার্নিচার, ইলেকট্রিক-ইলেকট্রনিক প্রভৃতি কাজে প্রতি বর্গফুটের জন্য এক হাজার ৫০০ টাকার বেশি ব্যয় করা যাবে না।
তবে আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামে বিলাসিতা বা চাকচিক্যের পরিবর্তে মৌলিক প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে পর্যাপ্ত গুণগত মান ও টেকসই হওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের পরিদর্শনে সিটি ব্যাংকের এসব সেন্টারের প্রতি বর্গফুট সাজসজ্জায় এই নির্দেশনার চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করার প্রমাণ মিলেছে। অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের কারণ জানতে চেয়ে ২০১৫ সালের শেষ দিকে সিটি ব্যংক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে প্রতি বর্গফুটের সাজসজ্জার জন্য ৩ হাজার ৯৯৯ টাকা খরচ করার আবেদন করে সিটি ব্যাংক।
প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা লঙ্ঘন করে নিজেদের ইচ্ছেমতো সাজসজ্জার কাজ করায় সিটি ব্যাংকের প্রায়োরিটি সেন্টার নির্মাণের কাজ আবার শুরু করার অনুমতি দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন ও নির্দেশনা সব ব্যাংকের জন্য সমান। সিটি ব্যাংক কেন সেটা অমান্য করবে? এটা হতে পারে না। তাই কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৬
এসই/আরএম