ঢাকা: শত শত গার্মেন্ট শ্রমিক নিয়ে পোশাক উৎপাদন করতে হবে না গার্মেন্ট মালিকদের। শ্রমিক ছাড়াই উৎপাদন সম্ভব।
অবাক হলেও সত্যি, এমন আপডেট আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ মেশিন এখন বাজারে এসেছে। এসব গার্মেন্ট মেশিনারিজকে গার্মেন্ট মালিক ও সংশ্লিষ্টদের কাছে আরও পরিচিত করতে চার দিনব্যাপী মেলা বসেছে রাজধানীতে।
আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় চলছে পোশাক শিল্পের মেশিনারিজ এবং এর সহায়ক পণ্যের ১৫তম আর্ন্তজাতিক প্রদর্শনী ‘গার্মেন্টটেক বাংলাদেশ ২০১৬’; সপ্তম ‘ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিক র্সোসিং ফেয়ার’ এবং সপ্তম ‘গ্যাপেক্সপো ২০১৬’ শীর্ষক তিনটি আলাদা প্রদর্শনী। মেলায় ৩০টি দেশের ৩০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
মেলায় বিভিন্ন মেশিনারিজ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সেসব কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীরা এসেছেন। কোম্পানির প্রকৌশলীরা মেলায় আসা গার্মেন্ট কোম্পানির মালিক ও টেকনিশিয়ানদের মেশিন পরিচিতি ও নানা বিষয় বুঝিয়ে দিচ্ছেন ।
মেলা চলবে আগামী শনিবার (১৬ জানুয়ারি) পর্যন্ত।
গার্মেন্ট মেশিনারিজ, যন্ত্রাংশ, ফেব্রিকস ও কাঁচামাল সম্পর্কে দেশের গার্মেন্ট সংশ্লিষ্টদের ধারণা দিতেই এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেলা আয়োজক কমিটি।
মেলায় আসা ডিবিএল গার্মেন্ট কোম্পানির টেকনিশিয়ান মহিউদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, এ মেলায় যেসব মেশিন উঠেছে তার বেশিরভাগই রোবোটিক।
অর্থাৎ হাতের মাধ্যমে কোনো কাজ হবে না। যা করার সবই করবে মেশিন। ফলে একজন শ্রমিক যখন ঘণ্টায় ১০টি কাপড় তৈরি করবে তখন মেশিন তৈরি করবে ২০টি।
এছাড়াও এসব মেশিন শ্রমিক সাশ্রয় করবে। ফলে একই কাজের অন্য মেশিন চালাতে পাঁচজন শ্রমিকের প্রয়োজন হলেও অটোমেটিক এসব মেশিনের তা প্রয়োজন হবে না। কোনো শ্রমিক ছাড়াই শুধু কম্পিউটার ডিজাইন দিয়ে নির্দেশনা দিলেই কাজ করবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
তার সঙ্গে মেলায় আসা ডিবিএল গার্মেন্টের টেকনিশিয়ান তানভির হাসান বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো? মেলায় যে সকল মেশিন এসেছে, তার সবগুলোই আপডেট ও আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। এবারের মেলায় বিভিন্ন মডেল আধুনিক মেশিন দেখছি।
নিশো অ্যাপারেল মেশিনারি কোম্পানির ম্যানেজার মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের কোম্পানির সুইং মেশিনগুলো চালাতে কোনো শ্রমিক লাগবে না। একটি মেশিন একাই আট থেকে পনেরজন পর্যন্ত শ্রমিক সাশ্রয় করবে। ফলে নির্দেশনা দিয়ে চলবে একটি গার্মেন্টের উৎপাদন কাজ।
আন্তর্জাতিক মেশিনারিজ কোম্পানি জোজি’র সহকারী প্রকৌশলী এনামুল হক তার স্টলে প্যাকেজিংয়ের কাজ করা ইন্টেলিজেন্ট প্যাটার্নশিল মেশিনের পরিচিতি তুলে ধরে বাংলানিউজকে বলেন, এটা এমন একটি মেশিন যাতে একজন শ্রমিক একাই দু’টি মেশিন চালাতে পারবে। তার জন্য শুধু তাকে কম্পিউটারে নির্দেশনা ও ডিজাইন করে দিতে হবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে এ ধরনের মেশিনের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে বলেও জানান তিনি।
অনন্ত গার্মেন্টের টেকনিশিয়ান কামারুজ্জামান খান বলেন, এবারের মেলায় অনেক আপডেট মেশিন এসেছে। যা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক আধুনিক ও অটোমেটিক।
জুজি বিডি লি. এর এক্সিকউটিভ সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং এনএ জাবেদ খান বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় ব্যাপক সাড়া মিলছে। গার্মেন্ট কোম্পানির মালিক থেকে শুরু করে টেকনিশিয়ানরা আসছেন এবং তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন, জানছেন ।
গার্মেন্টস মেশিনারিজ ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ তৈরিকারক কোম্পানি সিমেটজের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার ফেরদৌস হাসান আশা করছেন, বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) থেকে মেলা আরও জমবে।
এবারের মেলায় গার্মেন্ট মেশিন তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান জ্যাক, ব্রাদার, পেগাসাস, সিরুবা, জুকি, টাকিং, ইয়ামাতা, ইয়ামোতো, ফাউ, জোজি, জাজি ও পেসিসিয়াসসহ দেশি-বিদেশি তিনশ’ কোম্পানি সুইং, অন সুইং ও ফিনিসিংসহ নানা মেশিনারিজ মেলায় প্রদর্শনীর জন্য নিয়ে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৬
এমআইকে/এএসআর