খুলনা: বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের মধ্যে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজ উপলক্ষে খুলনার অর্থনীতির পালে হাওয়া লেগেছে। বেড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও আর্থিক লেনদেন।
বিশ্লেষকদের মতে, শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় দেশ-বিদেশ থেকে খুলনায় অনেক মানুষ এসেছেন। এ কারণে এখানকার আর্থিক লেনদেন, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটেছে। ক্রিকেট উৎসবের ফলে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে ব্যাপক আর্থিক লেনদেনসহ বহুমুখী অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।
চলমান ‘ওয়ালটন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সিরিজ বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে-২০১৬ পাওয়ার্ড বাই মার্সেল’ সিরিজের চারটি খেলাই খুলনায় আয়োজন করায় এখানকার আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোর ব্যবসায় জমজমাট অবস্থা বিরাজ করছে। একইসঙ্গে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিসিপ্লিনের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মো. নূর উন নবী বাংলানিউজকে বলেন, খুলনায় খেলার আয়োজন করায় পর্যটক ও অতিথিদের আগমন ঘটেছে। খুলনার পরিচিতি বাড়ছে। আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীসহ ছোট-বড়, স্থায়ী-অস্থায়ী ব্যবসায়ীদের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব এখানকার অর্থিনীতিতে পড়ছে।
খুলনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি ও খুলনা বিভাগীয় অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, খুলনার মাঠে আন্তর্জাতিক খেলা হলে খুলনাবাসী উৎসব হিসেবে উপভোগ করেন। যার প্রমাণ মাঠের দর্শক। খুলনার মাঠে যতো দর্শক হয় বাংলাদেশের আর কোনো মাঠে এতো দর্শক হয় না বলে এসময় দাবি করেন তিনি।
তিনি জানান, খেলা চলাকালে পাল্টে গেছে অর্থনীতি। পূর্বের চিত্র পাল্টে হোটেল-রেস্টুরেন্ট এখন অতিথিতে ভরা। যা এ ব্যবসার জন্য সুবাতাস। এছাড়া খেলাকে কেন্দ্র করে অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। যার ইতিবাচক প্রভাব এখানকার অর্থনীতিতে পড়ছে।
নগরীর হোটেল রয়্যাল ইন্টারন্যাশনাল, ক্যাসল সালাম, সিটি ইন, ওয়েস্টার্ন ইন, মিলেনিয়াম লি., পার্ক, টাইগার গার্ডেন, গোল্ডেন কিংসহ অভিজাত হোটেলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব হোটেলে প্রায় শতভাগ সিটে অতিথি রয়েছেন। অভিজাত হোটেল ছাড়াও ছোট-বড় প্রায় অর্ধশত আবাসিক হোটেলেও সিট খালি নেই।
নগরীর বড় বাজার এলাকার হোটেল অ্যাম্বাসিডরের কর্মকর্তা দেবু মণ্ডল বাংলানিউজকে বলেন, খেলা উপলক্ষে হোটেলে ৩৮টি সিটের সবকটি বুকিং রয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে অতিথিরা আসছেন। খালি না থাকায় চাহিদা মতো সিট দিতে পারছি না।
নগরীর ব্যস্ততম সাত রাস্তার মোড়ের শামীম হোটেলের মালিক মো. শামীম বাংলানিউজকে বলেন, খুলনায় খেলা আসলেই আমাদের ব্যবসা জমজমাট হয়। দিনরাতই আমাদের ব্যস্ত থাকতে হয়। বাড়তি আয় হয়, রাখতে হয় বাড়তি কর্মচারীও।
মিস্ত্রীপাড়া এলাকার রিকশাচালক কবীর হোসেন বলেন, খুলনায় খেলা আসলি রিকশা আলাগে দাম বাড়ে। আয়ও বাড়ে।
স্টেডিয়ামের সামনে পতাকা বিক্রেতা রইস উদ্দিন জানান, খেলা চলাকালে তার মতো অনেকেই পতাকা বিক্রি করে বাড়তি আয় করেন।
এসব মানুষের দাবি খুলনার মাঠে যেনো বেশি বেশি খেলার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৬
এমআরএম/জেডএস