ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বিশ্বে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হবে বাংলাদেশি চিংড়ি

এস এম আব্বাস, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৬
বিশ্বে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হবে বাংলাদেশি চিংড়ি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম/ফাইল ফটো

ঢাকা: ল্যাটিন আমেরিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাগদা ও গলদা চিংড়িকে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে ওই অঞ্চলের বাজার পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও বিশ্বে বাংলাদেশি চিংড়ির বাজার সম্প্রসারণ করা হবে।


 
দেশীয় চিংড়ির রফতানি বাড়াতে সরকার ও ব্যবসায়ীরা যৌথভাবে এ উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার ও ব্যবসায়ীদের ধারণা বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশি চিংড়ির ব্র্যান্ডিং করা গেলে তা রফতানি বাণিজ্যে ব্যাপক সফলতা আনবে।
 
এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে আগামী মার্চ থেকেই ল্যাটিন আমেরিকায় এই ব্র্যান্ডিং শুরু করবে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল।

বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) এ উদ্যোগে সহায়তা দেবে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।

বিএফএফইএর চেয়ারপারসন সৈয়দ মাহমুদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, ল্যাটিন আমেরিকায় বাংলাদেশি চিংড়ির বাজার ফেরাতে আমরা নতুন উদ্যোগ নিচ্ছি। সেখানে বাগদা ও গলদা চিংড়িকে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। মার্চ থেকে ক্যাম্পেইন শুরু করা হবে। এ উদ্যোগে আমাদের সহযোগিতা করবে ইপিবি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশি চিংড়ির সবচেয়ে বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। এসব দেশে চিংড়ি রফতানির ৬০ শতাংশ হয়ে থাকে। এরপর দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার ল্যাটিন আমেরিকা ও যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চল। তবে ল্যাটিন আমেরিকায় একসময়ে চিংড়ি রফতানি ৪০ শতাংশ থাকলেও বর্তমানে তা অনেক কমে এসেছে।

এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, ভারত, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম এক ধরণের চিংড়ি উৎপাদন করে এসব দেশে রফতানি করছে। ওই চিংড়ি চাষে খরচ কম ও উৎপাদনও বেশি।

ফলে বাংলাদেশি চিংড়ি গুণগত মানে ও স্বাদে উন্নত হলেও  মূলত কম মূল্যের কারণে ভারত, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের চিংড়ির বাজার ল্যাটিন আমেরিকায় সম্প্রসারিত হচ্ছে। এতে করে কমে গেছে বাংলাদেশি চিংড়ি রফতানি। গত ১০ বছরে রফতানির পরিমাণ হ্রাস পেয়ে ৪০ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে।
 
এ বিষয়ে সৈয়দ মাহমুদুল হক বলেন, ল্যাটিন  আমেরিকায় ২০০৪-২০০৫ সালেও বাংলাদেশ চিংড়ি রফতানি করতো ১৬০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত ১০ বছরে রফতানি হয়েছে মাত্র ৩০ মিলিয়ন ডলার। গত ১০ বছরে চিংড়ি ৪০ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশে নেমে এসেছে ল্যাটিন আমেরিকায়। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে চিংড়ি রফতানি কমেনি।

তিনি বলেন, ল্যাটিন আমেরিকায় কিভাবে বাজার ফেরানো যায় সে লক্ষেই কারণেই আমরা সেখানে ক্যাম্পেইন করতে যাচ্ছি। বাজার কমে যাওয়ার কারণে  বাজার বহুমূখীকরণ করতে যাচ্ছি।

তিনি জানান, আগামী ৬-৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে চিংড়ি মেলা হবে। সেখানে বাংলাদেশ ‍অংশ নিয়ে গলদা ও বাগদা চিংড়িকে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবে।

তিনি বলেন, ল্যাটিন আমেরিকায় ভারত, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে যে চিংড়ি যাচ্ছে তার উৎপাদন খরচ কম, উৎপাদনও বেশি। কিন্তু আমরা বাগদার সঠিক দাম পাচ্ছি না। রফতানি কমে গেছে। সে কারণে আমরা বাগদা চিংড়িকে একটি প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছি। আন্তর্জাতিক বাজারে গলদা ও বাগদা চিংড়িকে আমরা প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবেই উপস্থাপন করবো।
 
তিনি আরো বলেন, আমাদের চিংড়ি সাইজে, কালারে ভালো ও সুস্বাদু। তাই ল্যাটিন আমেরিকা ও যুক্তরাষ্টের বিভিন্ন রাজ্যে ক্যাম্পেইন করতে চাই। আমরা সেখানে বাগদা ও গলদা চিংড়িকে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

নতুন করে চিংড়ির বাজার অনুসন্ধান ও হারানো বাজার ফিরে পেতে ব্যবসায়ীদের ল্যাটিন আমেরিকায় ব্র্যান্ডিংয়ে যাওয়ার কথা ছিল আগামী ১৯ জানুয়ারি। কিন্তু এটা পিছিয়ে মার্চে নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৬
এসএমএ/এসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।