ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রবি-এয়ারটেলের এক হওয়া নিয়ে অন্যান্য অপারেটর ইতিবাচক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৬
রবি-এয়ারটেলের এক হওয়া নিয়ে অন্যান্য অপারেটর ইতিবাচক

ঢাকা: বেসরকারি মোবাইল অপারেটর রবি ও এয়ারটেলের ব্যবসা একীভূত হওয়া (মার্জার) নিয়ে বাকি চার অপারেটর ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ার‌ম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।
 
একীভূত ইস্যুতে সোমবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) বিটিআরসি ভবনে গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, টেলিটক ও সিটিসেলের সঙ্গে আলোচনার পর একথা জানান বিটিআরসি চেয়ারম্যান।


 
ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, মার্জার ইস্যু প্রসঙ্গে প্রত্যেকটা অপারেটর মনে করে, এটা গ্রাহকদের জন্য ইতিবাচক। প্রতিটা অপারেটর একীভূত হওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছে।
 
তিনি বলেন, তবে আরও কিছু কারিগরি কাজ বাকি, সেগুলো যেন করা হয়। যেমন, স্পেকট্রাম (তরঙ্গ) সব চেয়ে বড় ইস্যু। মার্জারের ফলে রবি-এয়ারটেলের স্পেকট্রাম বেশি হবে, উদ্বৃত্ত স্পেকট্রাম নিয়ে কমিশন মিটিংয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেব। আমাদের আজকের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল এরা (চার অপারেটর) কী মনে করে, বা এদের উপরে কী ইমপ্যাক্ট হবে। সবাই পজেটিভ মনোভাব দিয়েছে।
 
বিটিআরসির এক কর্মকর্তা জানান, উন্নতমানের ভয়েস কল, ডাটা সার্ভিসসহ অন্যান্য সেবায় স্পেকট্রাম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমানে এয়ারটেলের ২০ মেগাহার্টজ আর রবির ১৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ রয়েছে। একীভূত হওয়ার পর দুটি অপারেটররের মোট তরঙ্গ হবে ৩৯ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ।
 
আর গ্রামীণফোনের রয়েছে ৩২ মেগাহার্টজ ও টেলিটকের ২৫ দশমিক ২০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ।
 
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি গণশুনানি হবে, সেখানে জনসাধারণের কাছে মতামত নেব। বিটিআরসি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি সব মতামত একসঙ্গে করে কমিশন মিটিংয়ে উপস্থাপন করবে।
 
বিটিআরসি চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বৈঠকে গ্রামীণফোনের হেড অব কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স মাহমুদ হোসেন, বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক অস্, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ও সিটিসেলের প্রতিনিধি আলোচনায় অংশ নেন।
 
বিটিআরসির এক কর্মকর্তা জানান, সংস্থার হাতে থাকা অব্যবহৃত টু-জি ও থ্রি-জি তরঙ্গ নিলাম একীভূতকরণের আগে হবে না পরে হবে তা জানতে চেয়েছে অপারেটররা। দুই অপারেটরের একীভূতকরণ ও তরঙ্গ নিলাম প্রক্রিয়া একসাথেই চলতে থাকবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
 
বিটিআরসির কাছে থাকা এক হাজার ৮০০ মেগাহার্টজের অব্যবহৃত ১০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ এবং থ্রিজি’র ১৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ মোবাইল অপারেটরদের কাছে বিক্রির জন্য নিলামের কথা রয়েছে। বৈঠকে চার অপারেটর তরঙ্গ বরাদ্দে ভারসাম্য করা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
 
রবি-এয়ারটেলের ব্যবসা একীভূত করতে গত ২৮ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর রবি আজিয়াটা লিমিটেড জানিয়েছে একীভূত কোম্পানি রবি নামেই ব্যবসা পরিচালনা করবে।
 
চুক্তি সম্পাদনের ফলে শেয়ার মূলধনের পুনর্বিন্যাস হবে। এতে আজিয়াটা ৬৮ দশমিক ৭ শতাংশ ও ভারতী ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করবে। বাকি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বর্তমানের অপর শেয়ারহোল্ডার জাপানের এনটিটি ডকোমোর কাছে থাকবে।
 
জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে চুক্তির পর চুক্তির কার্যকারিতা বিটিআরসি, সরকার এবং আদালতের অনুমোদন পাওয়ার ওপর নির্ভরশীল বলে উল্লেখ করে এর আগে দুই অপারেটরের যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, এই প্রক্রিয়া আগামী দুই মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
 
দুই কোম্পানি এক হলে তাদের গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় চার কোটি, যা বাংলাদেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক-চতুর্থাংশ। বর্তমানে পাঁচ কোটির বেশি গ্রাহক নিয়ে গ্রামীণফোন সবার শীর্ষে রয়েছে।
 
বিটিআরসি’র হিসাবে ডিসেম্বর নাগাদ বাংলাদেশে মোট মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ৩৭ লাখ। এ সময়ে অপারেটর রবির গ্রাহক সংখ্যা দুই কোটি ৮৩ লাখ এবং এয়ারটেলের এক কোটি ৭১ হাজার।
 
বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম একীভূত করার সম্ভাবনার বিষয়ে গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর দুই কোম্পানি আলোচনা শুরুর ঘোষণা দেয়।
 
রবির মালিকানা মালয়েশিয়াভিত্তিক আজিয়াটা গ্রুপের। অন্যদিকে এয়ারটেলের মালিক ভারতের ভারতী এয়ারটেল; এর আগে তারা ওয়ারিদের ব্যবসা বাংলাদেশে কিনে নিয়েছিল।
 
এশিয়ার বড় টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোর মধ্যে আজিয়াটা অন্যতম। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের পাশাপাশি কম্বোডিয়া, ভারত ও সিঙ্গাপুরেও তাদের ব্যবসা রয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৬
এমআইএইচ/এমজেএফ

** রবি-এয়ারটেলের একীভূতে বাকি অপারেটরদের ডেকেছে বিটিআরসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।