ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মেহেরপুরে তুলার ফলন ভাল হলেও হতাশায় চাষি

জুলফিকার আলী কানন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৬
মেহেরপুরে তুলার ফলন ভাল হলেও হতাশায় চাষি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মেহেরপুর: তুলা চাষ লাভজনক হওয়ায় মেহেরপুর জেলার কৃষকরা তুলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তবে এ চাষে ভাল ফলাফল পেলেও ভাল দাম না পাওয়ায় মেহেরপুরের তুলা চাষিদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।


 
এ বছর কাঙ্খিত দাম না পেলে আগামী বছর থেকে তুলা চাষ ছেড়ে দেবেন বলেও চিন্তা করছেন তুলা চাষিরা।

গতবার মণ প্রতি এক হাজার ৯শ’ টাকায় তুলা বিক্রি করে অনেক চাষিকে লোকসান গুণতে হয়েছিল। কিন্তু এবার তুলার দাম মন প্রতি ২শ’ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের আশা করছেন চাষিরা।

সূত্র জানায়, মেহেরপুর জেলায় তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় তিন হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এবার জেলায় তুলার চাষ হয়েছে দুই হাজার হেক্টর জমিতে। প্রতি বিঘা তুলা চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ছয় হাজার থেকে সাত হাজার টাকা।

গাংনীর পুড়াপাড়া গ্রামের তুলা চাষি শাজাহান আলী ও কবির হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় পনের বছর ধরে তুলা চাষ করে আসছি। প্রতি বছরই তিন থেকে চার বিঘা জমিতে তুলা চাষ করি। বিঘা প্রতি জমিতে তুলা চাষ করতে প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার টাকা খরচ হয়, আর বিঘা প্রতি তুলা উৎপন্ন হয় ১২ থেকে ১৫ মণ। যা থেকে প্রায় ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হওয়ার কথা।

গাড়াডোব এলাকার তুলা চাষি আজাদ আলী বলেন, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় তুলার ফলন ভালো হয়েছে। গত বছর এক হাজার ৯শ’ টাকা মণ দরে তুলা বিক্রি করেছি। এ বছর মণ প্রতি তুলার দাম ২শ’ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এবার আমাদের তুলা কিছুটা উন্নত হওয়ায় দাম দুই হাজার ৮শ’ থেকে তিন হাজার টাকা পেলে তবেই আমরা  লাভবান হবো। তা না হলে আগামীতে তুলা চাষ ছেড়ে দিয়ে অন্য চাষে ঝুঁকতে হবে।

তুলা উন্নয়ন বোর্ড গাংনী অঞ্চলের ইউনিট অফিসার, আব্দুল ওয়াদুদ বাংলানিউজকে বলেন, মেহেরপুর জেলায় এ বছর তুলার ভাল ফলন পেয়েছে চাষিরা। তবে দাম নিয়ে তাদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে।
 
তিনি বলেন, কৃষকদের তুলা চাষে আরও বেশি আকৃষ্ট করতে এবং তুলার উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তুলা উন্নয়ন অধিদপ্তরের লোকজন বিরতীহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তুলা উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে তুলার আমদানি কমে গেছে।

তিনি আরো জানান, দেশে চাহিদার মাত্র তিন ভাগ তুলা উৎপাদিত হয়। বাকি ৯৭ ভাগ তুলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বিদেশ থেকে তুলা আমদানি কমাতে সরকার তুলা চাষে বিশেষ নজর দিয়েছে। এ কারণে আগামীতে দেশে তুলার উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

উন্নত জাতের তুলা ও তুলার বীজ থেকে ভোজ্য তেল উৎপাদন করা হয় বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, মেহেরপুর জেলা উৎপাদনশীল এলাকা, তাই এ এলাকায় তুলা চাষ বাড়াতে পারলে কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হবেন। ধান-পাটসহ যে কোনো ফসলের চেয়ে তুলা চাষ বেশি লাভজনক।

প্রতি ৩৩ শতক জমিতে তুলা চাষ করতে মোট খরচ পড়বে সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার টাকা। সেখানে তুলা উৎপাদন হবে কম হলেও ১৫ থেকে ১৮ মণ। প্রতি মণ তুলার দাম সরকার দুই হাজার ১শ’ টাকা নির্ধারণ করেছে। এর আগের বছরে তুলার দাম ছিলো এক হাজার ৯শ’ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।