ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ ফাইল ফটো

বেনাপোল (যশোর): ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে ‘ইনট্রিগেটেড চেকপোস্টের’ ট্রাক পার্কিং চার্জ বৃদ্ধির প্রতিবাদে ডাকা ধর্মঘটে বন্দর দিয়ে আমদানি -রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।

শনিবার(১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় পেট্রাপোল স্থলবন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ী সংগঠন বৈঠক ডেকে এপথে বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে।



এদিকে বাণিজ্য বন্ধের কারণে বন্দরে দু’পাশে আমদানি-রফতানি পণ্য নিয়ে ৫ শতাধিক ট্রাক আটকা পড়ে আছে। এসব পণ্যের মধ্যে মাছ, পেঁয়াজ, ফুলসহ বিভিন্ন প্রকারের কাঁচামাল রয়েছে। দ্রুত ধর্মঘট প্রত্যাহার না হলে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানিকারক রেজাউল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় ‘ইনট্রিগেটেড চেকপোস্টে আমদানি-রফতানি পণ্যের ট্রাক পার্কিং চার্জ হঠাৎ করে অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এছাড়া বাণিজ্যিক কাজে সেখানে ব্যবসায়ীদের প্রবেশের উপর নানা বিধি-নিষেধ ও নিয়ম কানুন বেধে দেওয়া হয়েছে। এতে একদিকে দ্রুত বাণিজ্যে বাধা সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে অতিরিক্ত খরচ পড়ে যাবে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদে সভা ডেকে আমদানি-রফতানি বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উভয়ের মধ্যে আলোচনা চলছে। সমাধান হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

জানা যায়, পেট্রাপোল বন্দর টার্মিনালে আগে পণ্যবাহী ৪ চাকা লরীর (ট্রাক) প্রতিদিনের পার্কিং চার্জ ৮০ রুপি থেকে বাড়িয়ে ২৭০ রুপিতে করা হয়েছে। আর ১৬ চাকা লরির (ট্রাক)  পার্কিং চার্জ ১২০ রুপি থেকে ৫৬০ রুপিতে বাড়ানো হয়েছে।

এছাড়া বাণিজ্যিক কাজে ইনট্রিগেটেড চেকপোস্ট প্রবেশ করতে ঘণ্টা প্রতি চার্জ নির্ধারণ করা হচ্ছে। এতে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে খরচ বাড়লে তা প্রভাবও পড়বে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের উপর।

বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হাসাবুল ইসলাম বাণিজ্য বন্ধের বিষয়টি সকাল সাড়ে ১১টায় বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে জানান, সাধারণত সকাল ৯টা থেকেই এপথে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য শুরু হয়। কিন্তু ওপারে ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটে এখনও পর্যন্ত কোনো পণ্য বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেনি।

শুত্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় ভারতের ল্যান্ডপোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান ওয়াইএস সেরওয়াত ও বাংলাশের স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চৌধুরী ফিতা কেটে ‘ইনট্রিগেটেড চেকপোস্টের (সুসংহত চেকপোস্ট) উদ্বোধন করেন। গত ৩ বছর আগে ওই চেকপোস্টের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল।

৩০০ হেক্টর জমির উপরে তৈরি ওই আধুনিক চেকপোস্ট এলাকাটি ৩শ’ বিএসএফ সদস্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। এক হাজার ট্রাক একযোগে ধারণ করার ক্ষমতা সম্পন্ন ইনন্ট্রিগেটেড এই চেকপোস্ট চালু হলে বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে আরও গতিশীলতা আসবে। ট্রাক টার্মিনাল, এয়ারকন্ডিশন ওয়ার হাউজ, এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট জোন ও স্ক্যানিং মেশিনসহ  আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সহজ করার সবধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে এই বন্দরে।

এটি আধুনিকায়নের ফলে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রফতানি কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে, তেমনি আমদানিও বাড়বে কয়েকগুণ বলে আশা করছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। সেইসঙ্গে পেট্রাপোল-বেনাপোল বন্দর দিয়ে ট্রানজিট সুবিধাও নেবে ভারত সরকার।

১৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সুসংহত চেকপোস্ট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বন্দর ও কাস্টমসের মূল প্রশাসনিক ভবনসহ বিশ্রামাগার, চওড়া রাস্তা, আলো, আমদানি ও রফতানির ট্রাক রাখার গুদাম ঘর, পণ্য পরীক্ষার জন্য সিকিউরিটি চেকপোস্ট, পার্কিং, কোয়ারেন্টাইন ভবনসহ (পশু খাদ্য ও প্রাণী) খাদ্যের গুণগত মান পরীক্ষাগার।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৬
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।