ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রাইম ব্যাংকের বিল-ভাউচারে এমডি’র নির্দেশেই অনিয়ম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৬
প্রাইম ব্যাংকের বিল-ভাউচারে এমডি’র নির্দেশেই অনিয়ম

ঢাকা: প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আহমেদ কামাল খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যাংকের প্রায় চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধানে অগ্রগতি হয়েছে। একবছর ধরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ অভিযোগ অনুসন্ধান করছে।



প্রায় একই অভিযোগে দুদক ব্যাংকের একটি মামলার তদন্ত করে চার্জশিট দিলেও আহমেদ কামাল খান চৌধুরীর অভিযোগ পৃথকভাবে অনুসন্ধান করছে।

অভিযোগ রয়েছে, আহমেদ কামাল ভাউচার টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে প্রাইম ব্যাংকের ৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অনুসন্ধান শুরুর পর দুদক তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠালে তিনি লিখিতভাবে জবাব দেন। তবে তার এ লিখিত অভিযোগ দুদকের কাছে সন্তোষজনক ছিলো না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের জানুয়ারিতে দুদকে প্রাইম ব্যাংকের এমডি’র বিরুদ্ধে ভাউচার টেম্পারিংয়ের সরাসরি অভিযোগ আসে। ফেব্রুয়ারিতে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়। পরে অভিযোগ থেকে বাঁচতে তিনি কৌশলে ওই বছরের মার্চে ব্যাংকের এক কর্মকর্তাকে দিয়ে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করান।

ব্যাংকের দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মীর মো. সাইফুল ইসলাম, মো. শাহজাহান আলী সরকার, সাবেক ফেসিলিটি স্টাফ মো. সালমান এফ রহমান ওরফে বাবু ও মো. জুলফিকার আলী। পরবর্তীতে এ মামলার তদন্তভার দুদকে এলে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আদালতে সাইফুল ইসলামকে বাদ দিয়ে বাকি ৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

দুদকের এক কর্মকর্তা ঊদ্ধৃত না হওয়ার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভাউচার টেম্পারিংয়ের অভিযোগ সরাসরি এসেছিল প্রাইম ব্যাংকের এমডির বিরুদ্ধে।

তিনি যখন দেখলেন এটা দুদক অনুসন্ধান করছে, তখন ব্যাংকের পক্ষ থেকে পরের মাসে চারজনের নামে মামলা দায়ের করালেন। এ মামলা করে বুঝালেন এটাতে তার সম্পৃক্ততা নেই। ব্যাংকের প্রধান কর্তা হয়ে তিনি দায়ভার এড়াতে পারেন না। ’

দুদকের একটি সূত্র জানায়, ব্যাংকের পক্ষ থেকে আসা মামলা তদন্ত করে দুদক আইনানুযায়ী চার্জশিট দিলেও প্রাইম ব্যাংকের এমডি’র বিরুদ্ধে এ ঘটনায় আলাদাভাবে অনুসন্ধান চলবে। ইতিমধ্যে এ অনুসন্ধান কাজের অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্রের তথ্য, ব্যাংকের বিল-ভাউচারে অনিয়ম-দুর্নীতি তার নির্দেশেই হয়েছে।

এদিকে প্রাইম ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, ব্যাংকটির এমডি চেষ্টা করছেন ‌আলাদাভাবে যেনো তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগের অনুসন্ধান না চলে। সেজন্য উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি ধর্ণা দিচ্ছেন।

দুদকে আসা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রতারণার মাধ্যমে ভাউচার টেম্পারিং করে প্রাইম ব্যাংকের এমডি আহমেদ কামাল খান চৌধুরী ব্যাংকের তিন কোটি ৯২ লাখ ১৯ হাজার ১৪ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

অর্থ আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট এ অভিযোগ যাচাই করে গত বছরের ১৩ জানুয়ারি অভিযোগটি অনুসন্ধানের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। এরপরের মাসে অনুসন্ধানে নামে দুদক। এ বিষয়ে ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেশ কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করেছে।

প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আহমেদ কামাল খান চৌধুরী এর আগে এই ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৪ সালে প্রাইম ব্যাংকে যোগ দেন। দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও তিনি ক্ষমতাবলে ভারপ্রাপ্ত থেকে পুরোপুরি এমডি বনে যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুযারি ১৫, ২০১৬
এডিএ/বিএস/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।