ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বেনাপোল বন্দরে ধর্মঘটের ফাঁদে ব্যবসায়ীরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
বেনাপোল বন্দরে ধর্মঘটের ফাঁদে ব্যবসায়ীরা ছবি : বাংলানিউজটোয়েটিফোর.কম

বেনাপোল (যশোর) : ভারতের পেট্রাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ৪র্থ দিন চলছে। এদিনও বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।



বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে একটি ফলপ্রসূ বৈঠকে ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে বাণিজ্য চালু হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আবার জটিলতায় আটকে যায়। এতে এক প্রকার ধর্মঘটের ফাঁদে পড়ে ব্যবসায়ীরা।

বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) অনির্দিষ্টকালের ডাকা ধর্মঘটের ৪দিন চলছে। এপর্যন্ত কোনো পণ্য প্রবেশ করেনি। এতে বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীদের প্রায় ২০ কোটি  টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি তাদের। আর সরকারের রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বাংলানিউজকে জানান, প্রতিদিন বেনাপোল বন্দর থেকে দেড়শ থেকে ২শ ট্রাক বাংলাদেশি বিভিন্ন ধরনের পণ্য ভারতে রফতানি হয়ে থাকে। তেমনি ভারত থেকেও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করে।

এসব পণ্যের মধ্যে শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল ও পচনশীল পণ্য মাছ, পেঁয়াজ,পান,আদা,গম,চাল,ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য রয়েছে। কিন্তু টানা ধর্মঘটে এখনও পর্যন্ত আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে। এতে বেনাপোল-পেট্রাপোল দুই বন্দরে প্রায় দুই হাজার ট্রাক পণ্য আটকা পড়েছে।

তিনি আরও জানান, আটকে থাকা প্রতিটি ট্রাকে প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা ডেমারেজ যাচ্ছে। এছাড়া ব্যবসায়ীরা যে অর্থ দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি করছেন এর অধিকাংশ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া হয়ে থাকে। এতে তাদের ব্যাংকের সুদের মাসুলও গুণতে হচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে ৪ দিনের আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় প্রায় ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড গেছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের নেতা মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশি যে ট্রাক ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের সুসংহত চেকপোস্টে পার্কিং এ থাকবে। সেসব ট্রাক থেকে অস্বাভাবিক হারে টাকা আদায়ের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এনিয়ে  কয়েকদিন ধরে উভয়ের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হলেও এ পর্যন্ত সন্তোষ জনক কোনো সমাধান হয়নি।   এতে আটকে থাকা পচনশীল পণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম।

দ্রুত বাণিজ্য সচল না হলে ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া একদিন বাণিজ্য বন্ধ থাকলে সরকারের প্রায় ১৫ থেকে ১৮ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হয়। এতে ৪দিন আমদানি-রফতানি বন্ধ থাকায় সরকারের রাজস্ব আয় কমেছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা বলে জানান তনি।

বেনাপোল কাস্টমস কার্গো শাখার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস বাংলানিউজকে বলেন, আমরা আমদানি পণ্য গ্রহণ করতে প্রস্তুত রয়েছি।

এর আগে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে নবনির্মিত সুসংহত চেকপোস্টে পণ্যবাহী ট্রাকের পার্কিং চার্জ অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয় সেখানকার বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাণিজ্য বন্ধ ছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৬
পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।